আবছার রাফি : করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন চট্টগ্রাম শহরে রাইড শেয়ার করা অন্তত ২০ হাজার বাইক-রাইডার ও ৫ হাজার কার-ক্যাপ্টেন।
সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে গণপরিবহন বন্ধের সিন্ধান্ত নিয়েছে সরকার; তাতে বন্ধ হয়ে পড়ে পাঠাও, উবার, ওভাই, সহজসহ মোবাইল অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিং। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়ে রাইড শেয়ার করে উপার্জন করা চালকরা। তাদের জন্য নেই সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে সাহায্য-সহায়তা। তবে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও নিতান্ত পেটের দায়ে চুক্তিভিত্তিক রাইড শেয়ার করছে হাতেগোনা কিছুসংখ্যক রাইডার।
রাইডারদের অভিযোগ, তাদের এমন দুর্দিনে পাশে দাঁড়াচ্ছে না কোম্পানিগুলো।
ফ্রিল্যান্স রাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব চট্টগ্রাম’র সাবেক সভাপতি দীন মুহাম্মদ বলেন, চট্টগ্রামের রাইডশেয়ারিংয়ে সেবা দেওয়া মানুষগুলো বরাবরই অবহেলিত, বঞ্চিত। গত ২৬ মার্চ হতে আজ অবধি কর্মহীন হয়ে আছে চট্টগ্রামের ২৫ হাজার রাইডশেয়ারকারী চালক।
তিনি বলেন, এই দুর্যোগময় মুহূর্তে অ্যাপ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। কোনো প্রকার সহযোগিতা চট্টগ্রামের রাইডশেয়ারকারী চালকরা পায়নি সরকার বা অ্যাপ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। দুর্যোগের এই সময় অ্যাপ প্রতিষ্ঠানগুলো ও সরকারকে মানবিক হয়ে চালকদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।
‘গত ৩ বছর ধরে শ্রম দিয়ে আমরা অ্যাপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আয় করে দিয়েছি কোটি কোটি টাকা, আজ করোনা মাহামারির এ সময় তাদেরকে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।’ যোগ করেন দীন মুহাম্মদ।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পাঠাও চট্টগ্রাম অফিসের সিনিয়র কমিউনিটি লিডার পদে কর্মরত মো. জাফর একুশে পত্রিকাকে বলেন, আমরা বাইরের একটা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রাইডারদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে এখনো পর্যন্ত কোম্পানি থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি এ বিষয়ে।
চট্টগ্রাম উবার অফিসে টিম-লিডার পদে কর্মরত মো. শোভন বলেন, উবার কর্তৃপক্ষ সরাসরি কিছু করছে না তবে অন্যান্য সংস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত রাইডারদের তালিকা দিয়ে সাহায্য প্রদানে সহায়তা করছে।
তিনি আরও বলেন, গতকাল ‘স্পৃহা ফাউন্ডেশন’ নামে একটা এনজিওর সাথে কাজ করা শুরু করেছি। সেখানে রাইডারদের ক্যাশ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সব রাইডার না, যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তাদেরকে। এভাবে প্রায় ১৫০০ রাইডারকে সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কবে নাগাদ এ সহায়তা রাইডারদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। সেটা নির্ভর করছে ফাউন্ডেশন রিচ করার উপর।
প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর ২০১৭ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে পাঠাও, উবার, ওভাই, সহজ’র মাধ্যমে চট্টগ্রামে চালু হয় মোবাইল অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিং। শুরুতে তুমুল জনপ্রিয়তা থাকলেও পরবর্তীকালে নানা অনিয়ম, অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে।