চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষ ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে লাঠিপেটা করে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দিয়েছে ছাত্রলীগ। সোমবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এক মানববন্ধন থেকে এ হুমকি প্রদান করা হয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে ‘হত্যা’র পর করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে চমেক অধ্যক্ষ প্রভাব খাটিয়েছেন অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণ করার দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশ যৌথভাবে এ মানবন্ধনের আয়োজন করে।
মানবন্ধনে চবি ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে হত্যার পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রভাবিত করেছেন চমেক অধ্যক্ষ ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। এই সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের নির্দেশেই এ হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে চমেকের ফরেনসিক বিভাগ।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতার লাশ নিয়ে যিনি কোন একট মহলের হয়ে নোংরা ও অনৈতিক কাজ করেছেন। দিয়াজের খুনিদের বাঁচিয়ে দেওয়া ষড়যন্ত্র করে চলেছেন।
তিনি আরও বলেন, দিয়াজের লাশের ময়নাতদন্ত নিয়ে অনৈতিকতার আশ্রয় নেওয়ায় তার এক মুহুর্তের জন্যও চমেকের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ পদে থাকার সুযোগ নেই। তাই তাকে যদি অবিলম্বে এই পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। না হয় প্রয়োজনে লাঠিপেটা করে তাকে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিতাড়িত করতে বাধ্য হবে ছাত্রলীগ।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর এ সময় বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফানকে হত্যার মধ্য দিয়ে খুনিরা আজ লক্ষ লক্ষ ছাত্রলীগ নেতার হৃদয়ে রক্ষক্ষরণ সৃষ্টি করেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর দিয়াজের লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বিকৃত করে দিয়াজের পরিবার ও লক্ষ লক্ষ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর আবেগের সাথে বেঈমানী করেছে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে লুটপাট, অনিয়মের মাধ্যমে এ প্রতিষ্ঠানটিকে আজ তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করা ষড়যন্ত্র করেছে সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তাই এই প্রতিষ্ঠানে এক মুহুর্তও দায়িত্ব পালন করার সুযোগ নেই এই ব্যক্তির। অবিলম্বে তাকে এই প্রতিষ্ঠান থেকে অপসারণ করতে হবে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের সভাপতিত্বে এ মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু, সহ সভাপতি ইয়াসির আরাফাত কচি প্রমুখ।
এ সময় চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজন বলেন, ‘দিয়াজের হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে চমেক অধ্যক্ষ নৈতিকতার মানদন্ড লঙ্ঘন করেছেন। চমেকের বর্তমান অধ্যক্ষ অসংখ্য অনিয়ম, দূর্নীতির মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটিকে অকার্যকর করে চলেছে। ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরদের মতো গুটি কয়েক মানুষের হাতে জিম্মি। অবিলম্বে এই অধ্যক্ষকে অপসারণ করা ছাড়া এই প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কমুক্ত করার কোন সুযোগ নেই।’
মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা রাজনৈতিক ভাবে নোংরা ফায়দা নিতে ব্যস্ত, তাদের প্রতিহত করতে বীর চট্টলার ছাত্রসমাজ রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে নেমেছে।’