ঝিনাইদহ : করোনা এখনো শনাক্ত হয়নি। স্রেফ জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যান ঝিনাইদহ পৌরসভার ৮ নং খাজুরার সামাদ। ব্যস, তাতেই ছেড়ে দে মা কেদে বাঁচি, পলায়নপর অবস্থা সবার।
করোনার ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন গ্রামবাসী, আত্মীয়স্বজন এমনকি পরিবারের সদস্যরাও নেই। নেই স্থানীয় মসজিদের ইমাম। জানাজা ছাড়াই দাফনের উদ্যোগ।
আর তখনই এগিয়ে এলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার বদরুদ্দোজা শুভ। ক্ষণিকের জন্য তিনি ইমামের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। বললেন, জানাজার নামাজ আমিই পড়াবো। চিরদিনের জন্য চলে যাওয়া মানুষটাকে ধর্মীয় রীতি মেনে আমিই বিদায় দেবো।
হ্যাঁ, মানবিকতার চূড়ান্ত গল্পটি স্রেফ নাটক কিংবা সিনেমার পার্ট নয়, করোনা-ভীতি, করোনা-ঘৃণার দিনগুলোতে মানবতার অনন্য সাধারণ একটি পরাবাস্তব গল্প।
রোববার (১২ এপ্রিল) বিকেলে ঝিনাইদহ পৌরসভাতেই ঘটে ট্র্যাজিক পরিণতির পর এই মানবিক ঘটনাটি। এরপর ‘বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস’ পেইজে আপ দিয়ে জানানো হয় মন ভালো করে দেওয়ার এই গল্পটি।
জানা যায়, করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত সামাদ ফরিদপুরের কানাইপুরে কাজ করতেন। গতকাল শনিবার ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। পরে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের লোকজন মৃতদেহ নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ পৌরসভার খাজুরায় আসে। করোনার ভয়ে এলাকার কেউ আসে না। তখন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বদরুদ্দোজা শুভ তার জানাজার নামাজে ইমামতি করেন। নামাজে শরীক হন তার সহকর্মীরাই। শুধু তাই নয়, ইউএনও নিজ কাধে খাটিয়া তুলে নিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মৃত ব্যক্তির দাফনেরও ব্যবস্থা করেন।
এ প্রসঙ্গে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. বদরুদ্দোজা শুভ বলেন, করোনাভাইরাসে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করায় স্থানীয় লোকজন কেউ ছিল না। এমনকি মসজিদের ইমামও না। পরে মানবিকতার জায়গা থেকে আমি নিজেই জানাজার নামায পড়িয়েছি।