চট্টগ্রাম : করোনা-মোকাবিলায় চট্টগ্রামের ইম্পেরিয়াল হাসপাতালকে রিক্যুইজিশন করে প্রস্তুত করছে সরকার।
প্রথম অনুরোধে রাজি হওয়া নগরের পাঁচলাইশে অবস্থিত পার্কভউ হাসপাতালের পাশাপাশি সরকার করোনা-মোকাবিলায় ইম্পেরিয়াল হাসপাতালকে কাজে লাগানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে হাসপাতাল দুটিকে প্রয়োজন-অনুযায়ী প্রস্তুত করার কাজ শুরু করেছে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলা সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন এই দুটি হাসপাতালকে প্রস্তুতের কথা বলেন।
এর আগে বুধবার (২ এপ্রিল) ‘করোনা প্রতিরোধে পাশে থাকার সরকারি অনুরোধ ফিরিয়ে দিলো ইম্পেরিয়াল’ শিরোনামে একুশে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনের উদ্ধৃতি দিয়ে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করোনা মোকাবিলায় অসহযোগিতা এবং সরকারি অনুরোধ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। একইসাথে বক্তব্য তুলে ধরে অবস্থান পরিস্কার করা হয় ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও।
এর মধ্যেই শুক্রবার সার্কিট হাউজের সভায় পার্ক ভিউ হাসপাতালের পাশাপাশি ইম্পেরিয়াল হাসপাতালকে কাজে লাগানোর কথা জানান জেলা প্রশাসক।
সরকারের অনুরোধ ফিরিয়ে দেওয়া ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ফের প্রস্তুত – বিষয়টি আসলে কী?
এই প্রশ্নে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন শুক্রবার রাতে একুশে পত্রিকাকে বলেন, কর্নেল মাসুদ সাহেব বিষয়টি মনিটরিং করছেন, তিনি আমাদের জানিয়েছেন পার্ক ভিউ হাসপাতালের পাশাপাশি ইম্পেরিয়ালকেও প্রস্তুত করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আপাতত আমরা এই দুটি হাসপাতালকে সিলেক্ট করেছি। আগামি এক সপ্তাহ পর চট্টগ্রামের অবস্থা কী হয় জানি না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর অনুরোধ নয়, প্রয়োজন হলে আমরা রিক্যুইজিশন করবো। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যে হাসপাতালকে উপযোগী ও ভালো মনে করবো সেই হাসপাতালকে রিক্যুইজিশন করে আমরা কাজে লাগাবো কে সম্মতি দিলো না দিলো সেদিকে না তাকিয়ে।
ইম্পেরিয়াল হাসপাতালকে কাজে লাগানোর ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বলেন, ’জাতির এই দুঃসময়ে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালকে আমরা ব্যবহার করবোই। তারা এটা না দেওয়ার জন্য অনেক চালাকিও করেছে। যাক, এটি আমার মুখ দিয়ে বলতে চাই না, আপনারাই বের করুন।’
চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীরের সাথে চেষ্টা করেও এব্যাপারে কথা বলা সম্ভব হয়নি। প্রতিবারই ফোনে তাকে ওয়েটিং কিংবা ব্যস্ত পাওয়া গেছে।
অবশ্য এর আগে টেলিফোনে একুশে পত্রিকার কাছে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের অসহযোগিতার অভিযোগ করে এটি ব্যবহারের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি অর্ডার করিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছিলেন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও জেলা প্রশাসকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেডের বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. রবিউল হোসেন একুশে পত্রিকাকে তাদের কিছু সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে বলেছিলেন, এরপরও জাতির প্রয়োজনে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালকে সরকার কাজে লাগাতে চাইলে তাদের আপত্তি নেই এবং কর্নেল মাসুদ সাহেবের সাথে এ ব্যাপারে তাদের কথা হচ্ছে বলে একুশে পত্রিকাকে জানান ডা. রবিউল হোসেন।