একুশের গ্রন্থমেলায় শান্তনু চৌধুরীর বড় মেজ ছোট ও মোবাইল জার্নালিজম

ঢাকা : শান্তনু চৌধুরীর দুটি বই প্রকাশ হয়েছে এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। একটি সাহিত্য জগতে সর্বাধিক পরিচিত তিন ভাই হুমায়ূন আহমেদ, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীবকে নিয়ে ‌‌’বড় মেজ ও ছোট’। বইটি প্রকাশ করেছে অন্বেষা প্রকাশন। প্যাভেলিয়ন নম্বর ৩৩। দাম ২৭০ টাকা। উৎস প্রকাশন থেকে প্রকাশ হওয়া অপর বইটির নাম মোবাইল জার্নালিজম। প্যাভেলিয়ন নম্বর ৩২। দাম ২২০ টাকা। দুটি প্রকাশনা সংস্থাই বাংলা একাডেমির পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

বড় মেজ ছোট : হুমায়ূন আহমেদের রঙ্গ রসিকতা, মানুষকে চমকে দেয়ার ক্ষমতা, বৃষ্টি বা জোছনাবিলাস, বিয়ে বা মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক। বিজ্ঞানের প্রতি, দেশের প্রতি, শিশু-কিশোরদের প্রতি মুহম্মদ জাফর ইকবালের ভালোবাসা বা একজন আশাবাদী মানুষ। আর ‘উন্মাদ’ নিয়ে যিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন কৌতুকের দাদা হিসেবে। কিন্তু তিনি উন্মাদ নন! সেই আহসান হাবীবের অনেক গল্পই আমাদের হয়তো জানা। এরপরও থেকে যায় কত অজানারে! আপনি জানেন কি, ছেলেবেলায় হুমায়ূন আহমেদ খেলনা পেলেই ভেঙে টুকরো টুকরো করতেন, প্রথম দিন তিনি স্কুলে গিয়েছিলেন প্যান্টের জিপার খোলা রেখেই। আর মুহম্মদ জাফর ইকবাল রাগ করলে বন্ধ করে দিতেন খাওয়া দাওয়া, ছেলেবেলা থেকে কথা বলতেন কম। কিংবা আহসান হাবীব প্রায় কালো ভূত দেখতেন। প্রেম ছাড়া কোনো বিষয়েই তিনি সিরিয়াস নন! তিনি দেখতে পান শব্দের রঙ। এমন আরো নানা গল্পে শান্তনু চৌধুরী সাজিয়েছেন তিন কিংবদন্তি, তাঁরা তিনজনের গল্প নিয়ে বড় মেজো ছোট। এতে পাবেন উপন্যাসের তৃপ্তি, ছোট গল্পের অতৃপ্তি আবার প্রবন্ধের সাবলীলতাও।

মোবাইল জার্নালিজম : সময়টা পাল্টেছে। এই সময়ের রিপোর্টারদের হাতে হাতে ঘুরছে মোবাইল ফোন। আগে সাংবাদিকদের পকেটে কাগজ, কলম বা একটা ছোট্ট প্যাড থাকতো এবং তাই নিয়ে যেতেন তারা মাঠে মাঠে। এখন তাদের হাতে মোবাইল ডিভাইস। এখন কলম দিয়ে যেমন লিখছেন, তেমনি তারা লিখছেন মোবাইলে কি-বোর্ডে। এক সময় রির্পোটারের সঙ্গে একজন ফটোগ্রাফার যেতেন, সঙ্গে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও। এখন রিপোর্টারের সঙ্গে থাকা মোবাইলটা দিয়েই অনেক কিছু হয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে পাঠকের চাহিদাও বেড়েছে। আগে পাঠক খবর পড়েই তৃপ্ত থাকতেন, তারাই এখন চান বাড়তি কিছু। সত্যি ঘটছে কিনা তার প্রামাণ্য ভিডিও। সাংবাদিকতায় প্রিন্ট মিডিয়া বা ইলেকট্রনিক মিডিয়া সবকিছুর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল জার্নালিজম। বলা চলে এখন সময় মোবাইল জার্নালিজমের। এই সময়ে একজন সাংবাদিককে প্রযুক্তিবান্ধব হতে হবে। এই বইয়ে চেষ্টা করা হয়েছে সেই সম্ভাবনার আদ্যোপান্ত তুলে ধরতে।

লেখক পরিচিতি : শান্তনু চৌধুরী ভালোবাসার নাগরিক মানুষ। লেখক পরিচয়ের বাইরে তিনি সাংবাদিক। তাও প্রায় দুই দশক ধরে। হাতেখড়ি হয় একুশ শতকের দৈনিক স্লোগান নিয়ে আসা প্রথম আলোতে। ফিচার বিভাগ দিয়ে কাজ শুরু হলেও পরে তিনি ঝুঁকে পড়েন মাঠের সাংবাদিকতায়। কাজ করেছেন প্রথম আলো, জনকণ্ঠ, যুগান্তর, বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ, সুপ্রভাত বাংলাদেশ, ভোরের কাগজ ও সংবাদপত্র নামের দৈনিকে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি থেকে শুরু করে আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং রাজধানীতে এসে রাজনৈতিক, ক্রাইমসহ উন্নয়ন সাংবাদিকতার বিভিন্ন বিষয়ে রিপোর্ট করার অভিজ্ঞতা তাকে সমৃদ্ধ করেছে। দেশের অনেক বড় বড় ঘটনার সাক্ষীও তিনি। একসময় যোগ দেন শ্রুতিনির্ভর সংবাদ মাধ্যম এবিসি রেডিওতে। এরপর এসএটিভিতে। বর্তমানে কাজ করছেন চব্বিশ ঘণ্টা সংবাদ ভিত্তিক চ্যানেল সময় টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক হিসেবে। আবার শিল্পী তিনি, সমাজের দায়ও তাকে মেটাতে হয়। সেই ভাবনা থেকে সমানতালে লিখে চলেছেন গল্প, কবিতা ও উপন্যাস। প্রকাশিত বই পনেরোটি। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উত্তর ঢেমশা গ্রামে জন্ম নেয়া শান্তনু চৌধুরী প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ শেষ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।