শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

বিদায় চট্টগ্রাম

প্রকাশিতঃ ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ | ৯:০৬ অপরাহ্ন


নুরেআলম মিনা : ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম- বাঙালির সব অর্জনে ছিল চট্টগ্রামের অনন্য ভূমিকা। দেশে সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে চট্টগ্রাম সব সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। অপশক্তি ও অপসংস্কৃতিকে রুখে দিয়ে স্বাধীনতার শক্তিকে সুসংহত করেছে চট্টগ্রাম। পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, সাগর, নদ-নদী, হ্রদ-ঝরণা আর সবুজ উপত্যকায় ঘেরা প্রাচ্যের রানী খ্যাত চট্টগ্রামের সৌন্দর্যে আমি সবসময়ই মুগ্ধ। এই জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পেরে নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে করছি।

২০১৬ সালের ২০ জুলাই থেকে আমি জেলা পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম। চট্টগ্রামে জনবান্ধব সেবামুখী পুলিশিং নিশ্চিতকরণ, জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে দেওয়া, কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে জোরদার করার পাশাপাশি প্রবাসে কর্মরত চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের পুলিশি সহায়তার জন্য আমি চালু করেছি ‘প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক’। থানাকে সেবার কেন্দ্র ও জনগণের আস্থার প্রতীক করে গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সবক্ষেত্রেই আমি সম্মানিত চট্টগ্রামবাসীর অকুন্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছি।

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রদীপ্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে চট্টগ্রাম জেলার অকুতোভয় বীর পুলিশ সদস্যগণ ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো মহান মুক্তিযুদ্ধে। পরাশক্তির হাত থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য অগ্রভাগে থেকে জীবন বিলিয়ে দিয়ে শহীদ হয়েছিলেন চট্টগ্রাম জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার এম. শামসুল হক, বিভাগীয় দুর্নীতি দমন অফিসার (এসপি) মো. নজমুল হক পিপিএম, আরআই আকরাম হোসেন, কোতোয়ালী থানার ওসি আব্দুল খালেক, টিআই এম নুরুন নবী চৌধুরীসহ ৮১ জন পুলিশ সদস্য। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তির কাছাকাছি এসে সেই ৮১ জন শহীদ পুলিশ সদস্যের স্মৃতিকে চির অম্লান করে রাখার প্রয়াসে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইন্সে নির্মাণ করি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ জাগ্রত’৭১ ও স্মৃতি ভাস্কর্য রণবীর’৭১।

‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’ স্লোগানকে হৃদয়ে ধারণ করে মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্থাপন করেছি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মারক ম্যুরাল ‘পিতা তুমি বাংলাদেশ’।ম্যুরালের মাঝের স্তম্ভটিতে জাতির জনকের প্রতিকৃতি এবং দু’পাশের স্তম্ভ দু’টির একটিতে জাতির পিতার স্বর্ণোজ্জ্বল জীবনালেখ্য ও অপরটিতে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের (১৯৭১) ভাষণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে ।

বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী উন্নয়ন কার্যক্রম ও বহুমুখী পদক্ষেপের ফলে দেশ আজ অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছে সমৃদ্ধির পথে। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও ফোর্সের সর্বোচ্চ কল্যাণ কামনা হতে সবসময় চেষ্টা করেছি পুলিশ লাইন্স ও থানা-ফাঁড়ির পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে অগ্রগতির সে ধারাকে সমুন্নত রাখতে। সচেষ্ট আগ্রহ আর ঐকান্তিকতা নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ ও প্রত্যক্ষ নজরদারি করে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ের সহযোগিতা নিয়ে সম্পন্ন করেছি বহুবিধ উন্নয়নকাজ। এতে পুলিশ লাইন্স ও অন্যান্য স্থাপনা/ইউনিটগুলো হয়েছে অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন, গোছানো ও দৃষ্টিনন্দন। ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে ফোর্সের মনে। তাদের মনোবল এখন অনেক বেশি চাঙ্গা ও উজ্জীবিত।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইন্সসহ জেলার প্রতিটি থানা, তদন্ত কেন্দ্র, ফাঁড়ি ক্যাম্পে পুলিশ সদস্যদের কল্যাণ দেখার চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চটুকু। তাদের ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ কর্মোদ্দীপনা যোগাতে পুরস্কৃত করেছি প্রতি মাসে। অসুস্থ পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান, পুলিশ সদস্যদের মেধাবী সন্তানদের বৃত্তিমূলক অনুদান দিয়েছি নিয়মিত। কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছি।

নির্বাচনী সহিংসতায় গুরুতর আহত কনস্টেবল ফরহাদকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, ইফতার আয়োজনের অর্থ পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের সাইকেল কিনে দেওয়া ও দুর্ধর্ষ চোরদের ভ্যান কিনে দিয়ে অপরাধ জগৎ থেকে ফেরানোসহ নানা মানবিক উদ্যোগ নিয়েছি।

স্বল্প সময়ে পুলিশি সেবা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক, মাল্টিপারপাস মিলনায়তন, সুসজ্জিত ভাণ্ডার, সুপেয় পানি সরবরাহ, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির প্রসারসহ তিন বছরে বহু উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছি।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত পুলিশ মুভমেন্টের বিকল্প নেই। অনাহুত পরিস্থিতি সামাল দিতে স্বল্পসময়ে ফোর্স মোতায়েনের জন্য পর্যাপ্ত যানবাহন ছিলনা চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পরিবহন পুলে। এ অভাব পূরণে স্থানীয় শিল্পগ্রুপ, ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের সামাজিক কর্মকাণ্ড (সিএসআর) হতে অনুদান হিসেবে সংগ্রহ করেছি ২৯টি গাড়ি ও ১১টি মোটরসাইকেল। যার ফলে সহজতর হয়েছে জেলার অপরাধ দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা।

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে রেখেছি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ। তাঁদের সংবর্ধনা প্রদানসহ চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের বিভিন্ন আয়োজনে সর্বোচ্চ মর্যাদায় আসীন করেছি সবসময়।

অপবাদ ঘুচিয়ে কনস্টেবল নিয়োগে নজির রেখেছি সম্মানিত চট্টগ্রামবাসীর সহযোগিতায়। দরিদ্র মেধাবীদের অগ্রাধিকার দিয়ে মাত্র ১০০ টাকা খরচে পুলিশে চাকরির ব্যবস্থা করেছি। দালাল ও অনৈতিক লেনদেন প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার মানদণ্ডে দূর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী আধুনিক, ডিজিটাল ও জনবান্ধব পুলিশি সেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি পুলিশকে অধিকতর জনসম্পৃক্ত করার মানসে প্রকাশ করেছি চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের উন্নয়ন ও সাফল্যের সংকলন ‘অগ্রযাত্রা’ স্মরণিকার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশ করেছি বিশেষ সংকলন ‘চেতনায়’৭১ হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু’। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, শান্তি ও নিরাপত্তার পরিবেশ নিশ্চিতে পুলিশ ও জনগণের মধ্যে অটুট বন্ধন জরুরী এ বন্ধন জোরদারে লক্ষ্যে প্রকাশ করেছি ‘সেতুবন্ধন’ নামে স্মরণিকার। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ ও অগ্রজ পুলিশ সদস্যদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখার প্রয়াসে প্রকাশ করেছি মহান মু্ক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম পুলিশের গৌরবগাঁথার সংকলন ‘ভাস্বর’।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে বিএসএস (সম্মান) ও এমএসএস সম্পন্ন করে ২০তম বিসিএসের মাধ্যমে ২০০১ সালে বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী পুলিশ সুপার পদে যোগদান করি।

চট্টগ্রামের প্রতি আমার ভালবাসার শুরু ১৯৯৪ সাল হতে। ভাটিয়ারির বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ৩৪ তম লং কোর্সে প্রশিক্ষণে নিয়েছি ’৯৪ এর জুলাই হতে ’৯৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। সেনাবাহিনীর ট্রেনিং গ্রাউন্ড, উঁচু-নিচু মসৃণ পথ, পাহাড় জুড়ে বৃক্ষরাজির নৈসর্গিক সৌন্দর্য, পাহাড়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা সাগরের বুকে সূর্যাস্ত! মুগ্ধতার শুরু সেই থেকেই। তারপর থেকে যখনই সময় সুযোগ পেয়েছি প্রাণের টানে চট্টগ্রামে ছুঁটে এসেছি বার বার।

২০০২ সালে চট্টগ্রাম রেঞ্জ দপ্তরে দায়িত্ব পালন করেছি স্টাফ অফিসার টু ডিআইজি হিসেবে। এরপর ২০০৬ সালে সিনিয়র এ্যাসিট্যান্ট কমিশনার হিসেবে কিছুদিন কর্মরত ছিলাম চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে ২০০৬ সালের আগস্টে যোগদান করি চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলায়। এরপর নোয়াখালী, দারফুর সুদান, ঢাকা, কক্সবাজার হয়ে ২০১০ সালের নভেম্বরে যোগদান করি চট্টগ্রাম জেলায়। ২০১২ সালের এপ্রিলে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে সুনামগঞ্জ জেলায় পদায়িত হই। মাঝখানে সিলেট জেলা পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে আবার যোগ দেই পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম হিসেবে। সর্বশেষ গত ২৮ অক্টোবর ২০১৯ খ্রি. অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়েছি।

চট্টগ্রামের প্রতি ভালবাসার প্রতিদান চট্টগ্রাম আমায় দিয়েছে উদারহাতে। আমার কর্মজীবনের সবকয়টি প্রাপ্তির পেছনে রয়েছে চট্টগ্রামের ভূমিকা।এএসপি হতে এ্যাডিশনাল এসপি, এ্যাডিশনাল এসপি হতে এসপি, সর্বশেষ এসপি হতে এ্যাডিশনাল ডিআইজি; আমার সবকয়টি পদোন্নতি এই চট্টগ্রাম হতেই। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিরও সবকয়টি এসেছে চট্টগ্রামেরই কল্যাণে।২০১২ সালে এ্যাডিশনাল এসপি হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দক্ষতা ও সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল- পিপিএম (সেবা) পদকে ভূষিত হই। ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম জেলা হতে জঙ্গি দমন ও সীতাকুণ্ডে অপারেশন এ্যাসল্ট সিক্সটিন পরিচালনায় অসম সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের জন্য প্রাপ্ত হই বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল- বিপিএম (অসম সাহসিকতা)। সর্বশেষ চট্টগ্রাম জেলায় ২০১৮ সালে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও সেবা মূলক কাজের জন্য ২০১৯ সালের পুলিশ সপ্তাহে প্রাপ্ত হই বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল- বিপিএম (সেবা) পদক।

জঙ্গিবিরোধী অভিযান, সন্ত্রাস দমন, মাদক নির্মূল ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রামবাসীর কাছ থেকে যে সহযোগিতা আমি পেয়েছি তা কখনোই ভুলার নয়। এজন্য আমি চট্টগ্রামবাসীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

চট্টগ্রামের সাথে আমার পারিবারিক বন্ধন অনেক দিনের। আমার শ্বশুর বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া থানাধীন জিরি ইউনিয়নের কৈয়গ্রামে।আমার প্রয়াত দাদা শ্বশুর আহম্মদ মিয়া ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার ছিলেন। আমার পরলোকগত শ্বশুর এটিএম তারেক পুলিশ সুপার ছিলেন। সে সুবাদে চট্টগ্রামে আমার অনেক আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব আছে।
বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আধার চট্টগ্রাম। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড় নদীর সম্মিলন, কর্ণফুলীর বিশালতা, শান্ত-স্বচ্ছ জলরাশি, সৈকত, পাহাড়, ঝর্ণা আমার মতো যে কাউকেই আকর্ষণ করবে।

জীবনের অনেক সুন্দর সময় আমি চট্টগ্রামে কাটিয়েছি। চট্টগ্রামের মানুষ খুবই বন্ধুবত্সল ও অতিথিপরায়ণ। চট্টগ্রামের মানুষের সামাজিকতার প্রমাণ পাওয়া যায় মেজবান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। তাদের ভালোবাসাপূর্ণ মনোভাব সবসময়ই আমাকে মুগ্ধ করে। চট্টগ্রাম জেলায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মহোদয়, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ মহোদয়, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মহোদয়, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী, সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, প্রিন্ট-ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। তাঁদের নিকট অশেষ কৃতজ্ঞতা। আমার সহকর্মী পুলিশ সদস্যবৃন্দ যারা আমাকে নিরলসভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে আমার কর্মে সফলতা এনেছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। নতুন পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, পিপিএম একজন দক্ষ ও চৌকস অফিসার। তিনি তার অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও মেধা দিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সেবার মান আরো উন্নত করবেন মর্মে প্রত্যাশা করি।

সরকারি চাকরিতে বদলী ও পদায়ন স্বাভাবিক। পদোন্নতিজনিত কারণে চট্টগ্রাম হতে বিদায় নিয়েছি।এ বিদায় নেয়াটা কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। মন থেকে চট্টগ্রাম হতে বিদায় নেয়াটা কখনো সম্ভব নয়। চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামবাসী হৃদয়ে থাকবে সব সময়। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ও চট্টগ্রামবাসীর প্রতি গভীর মমত্ববোধ থেকে পূর্ণ আন্তরিকতা দিয়ে দায়িত্ব পালন করেছি প্রায় সাড়ে তিনবছর। আমার এই কর্মকালের যাবতীয় অর্জন চট্টগ্রামবাসী ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের। যদি কোন বিচ্যুতি থেকে থাকে তার দায় কেবলই আমার, এজন্য আমি বিনীতভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পরবর্তী দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আগামীতে মানুষের সেবায় নিজেকে যেন আরো বেশি নিয়োজিত রাখতে পারি সেজন্য আমি সকলের দোয়া চাই।

লেখক: নুরেআলম মিনা বিপিএম (বার), পিপিএম
অতিরিক্ত ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জ
সাবেক পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম।