বিষণ্ন আলোয় বাংলাদেশ : একজন যোগ্যতম যোদ্ধার বিদায়


ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া : বীর চট্টলার গর্বিত যোদ্ধা, লোহাগাড়ার মাটিতে জন্ম নেয়া ইস্পাত কঠিন মনোবল অথচ কোমল হৃদয়ের মানুষ, সাহসী বীর, মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, ২০১১ সাল থেকে রাষ্ট্রনায়ক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সামরিক সচিব হিসেবে আস্থা-নির্ভরতা ও সর্ব্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে অতন্দ্রপ্রহরী রূপে আমৃত্যু দায়িত্বরত ছিলেন।

দেশপ্রেমিক এই মহান বীর ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ওআইসি’সহ দেশ-বিদেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ও প্রতিষ্ঠান। তাঁর মৃত্যুতে দেশ হারিয়েছে এক মহান দেশপ্রেমিক যোদ্ধা, বঙ্গবন্ধু কন্যাদ্বয় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা হারিয়েছেন তাদের বিশ্বাস-ভালোবাসা ও আস্থা-ভরসার প্রধান ভ্যানগার্ড, আর চুনতি-লোহাগাড়ার মানুষ হারিয়েছে তাদের যোগ্যতম অভিভাবক, ভালোবাসার উজ্জ্বল বাতিঘর।

ক্ষণজন্মা মানুষটি জন্ম নিয়েছিলেন ১৯৬০ সালের ১ জানুয়ারি, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামে, এক সম্ভ্রান্ত মধ্যবিত্ত শিক্ষানুরাগী পরিবারে। বাবা- মরহুম মোহাম্মদ ইসহাক, মা- মরহুম মেহেরুন্নেসা, একমাত্র অগ্রজ সহোদর মোহাম্মদ ইসমাইল মানিক। বাবা ছিলেন ব্রিটিশ শাসনামলে ইউনিয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান এবং স্বনামধন্য সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী। পারিবারিকভাবে উদার ইসলামিক ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন অগ্রবর্তী চিন্তার আধুনিকমনস্ক মানুষ ছিলেন মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। প্রচলিত পারিবারিক রীতি অনুযায়ী লেখা-পড়ার হাতেখড়ি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসায়। ১৯৭০ সালে সপ্তম শ্রেণিতে তিনি ভর্তি হন ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে। ১৯৭৫ সালে এসএসসিতে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৭ম স্থান ও ১৯৭৭ সালে এইচএসসিতে ১১তম স্থান অধিকার করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ১৯৭৮ সালে।

২৫ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মজীবন শুরু হলো নবীন অফিসারের। শুরু থেকে মেধা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে পদাতিক ব্যাটালিয়নের অনেক রেজিমেন্টের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদাতিক ডিভিশনের জিএসও-৩ (ইস্ট), বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনীর উপপরিচালক, সেনা সদরের এমও পরিদপ্তরের জিএসও; শান্তিরক্ষী মিশনে কুয়েতে ডেপুটি চিফ লিয়াজোঁ অফিসার, ৭৭ পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার, বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) মহাপরিচালক। ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে স্টাফ কোর্স, যুক্তরাজ্যের স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রির বেসিক কোর্স, যুক্তরাজ্যের অ্যানফিল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ, যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন ট্রুপস ইউনিভার্সিটির স্টাফ কোর্স, মাস্টার্স অব মিলিটারি সায়েন্সসহ পেশাগত জীবনে দেশে এবং বিদেশে আরও অনেক ডিগ্রি অর্জন ও প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিয়েছেন, যার প্রতিটির ফলাফল ছিল বরাবরই ঈর্ষণীয়।

তাঁর পেশাগত জীবনে অন্যতম অনন্য অর্জন “বীর বিক্রম” উপাধি, যা মহান মুক্তিযুদ্ধ ব্যতিত মাত্র কয়েকজন সেনা অফিসারকে প্রদান করা হয়েছিল। চরম বিশৃঙ্খল, বিপদসঙ্কুল ও গোলযোগপূর্ণ পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৯৬ সালে ২ কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে শান্তিবাহিনী বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দীন আহমদসহ ৭ বেসামরিক ব্যক্তিকে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ি অরণ্যে নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তৎকালীন কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল জয়নুল আবেদীনের নিখুঁত পরিকল্পনা, বিচক্ষণ ও সাহসী নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালের ১৫ নভেম্বর কাউন্টার ইমারজেন্সি অভিযানে কোনো প্রকার রক্তপাত ও মুক্তিপণ ছাড়াই সকল জিম্মিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই অভূতপূর্ব বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর বিক্রম’ উপাধিতে ভূষিত হন।

প্রগাঢ় বুদ্ধিমত্তা, সাহস ও পেশাদারিত্বের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহকারী সামরিক সচিবের পদে ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি দায়িত্বরত ছিলেন। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে সরকারের অনন্য অর্জন ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি, যার নেপথ্য সহকারী ছিলেন পাহাড়ের অকুতোভয় বীরযোদ্ধা জয়নুল আবেদিন। ২০০৯ সালে তিনি এসএসএফ’র মহাপরিচালক পদে অধিষ্ঠিত হন। একজন সেনা অফিসার হিসেবে পেশাদারিত্বের পাশাপাশি তাঁর সততা, আনুগত্য ও বিশ্বস্ততা ছিল প্রশ্নাতীত। ২০১১ সাল থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্বরত ছিলেন। ২০১৭ সালে তার প্রশংসিত অবদানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাকে ওএসপি (অসামান্য সেবা পদক) প্রদান করে।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ১৯৮৬ সালে নিজ গ্রামের রফিক আহমদ চৌধুরী ও নোমেরা বেগমের ছোট মেয়ে আসিফা বেগম জিনা’র সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। রফিক আহমদ চৌধুরী কিংবদন্তিতুল্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নৃত্যাচার্য বুলবুল চৌধুরীর আপন ভাই, আসিফা বেগম জিনা তার ভাতিজি। জয়নুল-জিনা দম্পতি দুই মেধাবী কন্যা সন্তানের গর্বিত জনক-জননী। সাইবা রুশলানা আবেদীন ও ফাবিহা বুশরা- দু’কন্যাই কানাডায় উচ্চশিক্ষারত।

মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদিনের আরেকটি অসামান্য বৈশিষ্ট্য হলো তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য ও বিচক্ষণতা। বাংলা, ইংরেজি ছাড়া তিনি জার্মান, রুশ, হিন্দি, উর্দু, আরবী ভাষায় দারুণ পারদর্শী ছিলেন। প্রচলিত কওমী মাদ্রাসার ছাত্র হয়েও তাঁর স্বপ্নদর্শী ভাবনা, প্রগতিশীল উচ্চচিন্তা, জ্ঞান-মনীষা, গভীর দেশপ্রেম ও দূরদর্শিতায় আস্থা রেখেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। এই যথাযথ আস্থাশীলতার কারণে বাংলাদেশের প্রচলিত কওমী শিক্ষা আজ সর্ব্বোচ্চ ডিগ্রী হিসেবে স্বীকৃত। ধর্মের নামে বিভেদ, অনৈক্য, অপব্যাখ্যা আর পরিকল্পিত গুজবে যখন বিপর্যস্ত স্বদেশ, বিক্ষত উন্নয়ন যাত্রা, বিব্রত ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ তখন এই দূরদর্শী বীরের বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ও কৌশলী পরিকল্পনায় ধর্মীয় উম্মত্ততা ও উম্মাদনা প্রশমিত হয়ে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য অধ্যায় রচিত হয়েছে। কওমী সনদ স্বীকৃতির দিন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে লাখো লাখো কওমী জনতার সামনে তাঁর দেয়া বক্তব্য যুগে যুগে মডারেট মুসলমানদের জন্য সত্যিকারের দিকনির্দেশনা হয়ে থাকবে।

তিনি শুধু বৃহত্তর অর্থে দেশপ্রেমিকই নন, আঞ্চলিকভাবে তাঁর জন্মস্থান চুনতি তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের জন্য তিনি ছিলেন সকলের প্রিয় অভিভাবক। পরিবারের প্রধান অভিভাবক যেমন সকল সদস্যের দেখভাল করেন, তিনিও এতদঞ্চলে সে কাজটি করেছেন তাঁর পেশাগত জীবনের শুরু থেকেই। কখনও তিনি তরুণদের উৎসাহ দিয়েছেন দেশসেবায়, কখনো তিনি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল অসহায় মানুষের হয়ে উঠেছেন অনাথের একমাত্র অবলম্বন। তিনি আজীবন পথ দেখিয়েছেন চুনতি-লোহাগাড়ার মানুষদের; কখনো জাহাজের নাবিক হয়ে কখনোবা বাতিঘরের মত আলো জ্বালিয়ে, যেন একটি মানুষও পথ না হারায় অন্ধকারে।

দেশ-জাতির বৃহত্তর কল্যাণে উৎসর্গিত ক্ষণজন্মা মানুষটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের মাঝেও বারবার ফিরে এসেছেন তাঁর শিকড়ের টানে। নিজ গ্রাম চুনতি তথা লোহাগাড়ার প্রতিটি ঘরে তিনি পৌঁছে দিতে চেয়েছেন শিক্ষার আলো।

লোহাগাড়া উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসাকেন্দ্রিক ইসলামী শিক্ষার প্রচলিত ব্যবস্থার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন অন্তর দিয়ে। তিনি তাঁর রত্নগর্ভা মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন মেহেরুন্নেসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মেহেরুনন্নেসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়; চুনতির দুর্গম পানত্রিশায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন বীর বিক্রম জয়নাল আবেদীন উচ্চ বিদ্যালয়। তাঁর প্রচেষ্টায় দক্ষিণ সাতকানিয়া গোলামবারী উচ্চ বিদ্যালয়, লোহাগাড়া চুনতি মহিলা ডিগ্রি কলেজ ও সাতকানিয়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়। লোহাগাড়া-সাতকানিয়া উপজেলার যেসব দুর্গম রাস্তায় মানুষের চলাচলে অসুবিধা হত সেখানে তিনি সেতু ও পাকা রাস্তা নির্মাণ করেন। ঢাকা-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে চুনতিকে সংযুক্ত করতে বাবার নামে ইছহাক মিয়া সড়ক নির্মাণ করেছেন, যা দুর্ভোগ লাঘব করেছে লাখো মানুষের। লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিস, মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল তৈরিতে তাঁর ভূমিকা ছিল অসামান্য।

২০১৫ সালে তাঁর প্রচেষ্টায় চুনতি রাবার ড্যাম প্রকল্পসহ দেশে ১০টি রাবার ড্যাম প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়। বর্তমানে এই রাবার ড্যাম প্রকল্প এলাকা ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটন। প্রতিদিন সমাগম হয় বহু লোকের। রাবার ড্যামের মাধ্যমে চাষ হচ্ছে শত-শত একর জমি। এই রাবার ড্যাম বদলে দিচ্ছে এলাকার কৃষি ও পর্যটন। দৃঢ় প্রত্যাশা ছিল প্রিয় চুনতিতে ব্যক্তিগত ‘স্বপ্নবিলাস’ জমিতে পর্যটন শিল্পের ছোঁয়ায় অতিথি পাখির কলরব ও সাধারণ মানুষের হৃদয় নিংড়ানো জমায়েত দেখবেন; স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি কারিগরি শিক্ষা পল্লী গঠনের। স্বপ্নদর্শী এই মানুষটির মহা প্রস্থানে থেমে যায়নি তার স্বপ্নযাত্রা। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কদিনের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে, শুধু উদ্যমী মানুষটি তা দেখে যেতে পারলেন না। বিরল আত্মত্যাগী মানুষটি প্রদীপের ছায়ায় লুকিয়ে আলো ছড়ালেন সারাজীবন, আত্মপ্রচারিত হতে দেখেননি কেউ।

৫৯ বছরের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের পরতে পরতে তাঁর অর্জিত সব অসামান্য সাফল্যে দেশ-জাতির এমনতর গর্ব যেন তাঁর এই বীরোচিত স্বাভাবিক শেষযাত্রাকে অকালযাত্রা বলে মনে হয়। মৃত্যুই জন্মের প্রথম ও প্রধান শর্ত এবং সত্য, কেবল মৃত্যুই মৌলিক। মানুষ মাত্রই মরণশীল, কিন্তু কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন তেমনই এক কীর্তিমান বীর, যিনি অমর হয়ে থাকবেন প্রিয় চুনতির প্রতিটি ঘরে ঘরে, লোহাগড়ার আলোকিত পথে-প্রান্তরে, বীর চট্টলার বীরত্বগাথার ইতিহাসে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিজন প্রকৃত ধার্মিকের উৎকর্ষিত চেতনায়। সকল ষড়যন্ত্র আর পশ্চাৎপদতা পিছনে ফেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে জন্ম নেয়া ছোট্ট এই জাতিরাষ্ট্রটি বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে অতিক্রম করছে গর্বিত জন্মের অর্ধশতক। রাষ্ট্রনায়কের নির্দেশিত পথে আত্মমর্যাদাশীল আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নযাত্রায় মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন নির্ভীক অভিযাত্রীদের সাহস, অনুপ্রেরণা ও আদর্শ হয়ে বেঁচে থাকবে যুগযুগ ধরে।

“বাবা সব সময় বলতেন, রাগের চেয়ে ধৈর্য্য ভালো, ক্ষমা উত্তম; সম্পদের চেয়ে সততা মূল্যবান।” -ফাবিহা বুশরা (মরহুম মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের ছোট মেয়ে)

২০১১ সাল থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্বরত ছিলেন। ২০১৭ সালে তাঁর প্রশংসিত অবদানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাকে ওএসপি (অসামান্য সেবা পদক) প্রদান করে। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিখেছেন, “আমি শ্রদ্ধা জানাই আমার সামরিক সচিব ছিলেন মিয়া মোহম্মদ জয়নুল আবেদিন, ১৯৯৬ সালে আমি প্রথম যে বার সরকার গঠন করি তিনি তখন আমার সহকারী সামরিক সচিব হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সামরিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার মত সৎ, দক্ষ একজন সামরিক অফিসার খুব কমই পাওয়া যায়। যেহেতু মাঝখানে আমি ৭ বছর ক্ষমতায় ছিলাম না, যেটা হয় সরকারের সহকারী সামরিক সচিব ছিল বলে অনেক অত্যাচার বিএনপি সরকার দ্বারা তার উপর হয়েছে। কিন্তু পরে আবার আমি যখন সরকার গঠন করি আবার তাকে নিয়ে এসেছিলাম। তিনি আমাদের পরিবারের একজন সদস্য হিসেবেই ছিলেন। আমি তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি”

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া : দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী