রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম বন্ধু বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো

| প্রকাশিতঃ ২৬ নভেম্বর ২০১৬ | ৪:১৩ অপরাহ্ন

15227853_973097216128668_2051775045_nরিফাত মাহমুদ অরণ্য: ১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় জোট নিরপেক্ষ শীর্ষক চতুর্থ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও কিউবা ছিল। সেই সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রোর সাক্ষাৎ হয়। বঙ্গবন্ধুকে আলিঙ্গনাবদ্ধ করে কিউবার বিপ্লবী কমিউনিস্ট নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছিলেন, “আমি হিমালয় পর্বত দেখিনি। শেখ মুজিবকে দেখলাম। ব্যাক্তিত্ব ও সাহসে মানুষটি হিমালয়। আমি হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম”।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন কিউবার এই কমিউনিস্ট নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট৷ বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ক্যাস্ট্রোর সম্পর্ক ছিলো ঘনিষ্ঠ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ।

উক্ত সম্মেলনে ভাষন দিতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন,”পৃথিবী আজ দুইভাগে বিভক্ত। একভাগে শোষক শ্রেণী আরেকভাগে শোষিত। আমি শোষিতের দলে৷”

এই ভাষনের পর কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ট্রো শেখ মুজিবুর রহমানকে বলেছিলেন, “তুমি আজ যে ভাষন দিয়েছ,তারপর থেকে সাবধানে থেকো। আজ থেকে তোমাকে হত্যার জন্য একটি বুলেট তোমার পিছু নিয়েছে।“

মহামানব ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সেদিনের কথাটিই সত্য হয়ে যায় ঠিক দুই বছরের মাথায়৷ ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয় স্বপরিবারে৷

শোকাবহ ১৫ই আগস্টের পর যেমন হতবাক হয়েছিলো বিশ্ব নেতারা তেমনই বন্ধুর মৃত্যুতে শোকাহত হন ফিদেল ক্যাস্ট্রো৷ তখনকার কিউবার প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় এক শোকবার্তায় তিনি বলেন,

” শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের একজন মহান নেতাকে,আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে৷”

বাংলাদেশসহ স্বাধীনতাকামী বহু দেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকারীদের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ক্যাস্ট্রো। বাংলাদেশ সরকার অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ তিন বছর আগে তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায়’ ভূষিত করে।

৯০ বছর বয়সে শনিবার জীবনাবসান ঘটল কমিউনিস্ট বিপ্লবের মহানায়ক ফিদেল ক্যাস্ট্রোর ৷ একাত্তরে ফিদেল ক্যাস্ট্রোর অবদান স্মরণ করে তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।