ছাত্রলীগ ছেড়ে দিতে ইচ্ছে হয়…

chhatra-leagueবিল্লাল হাওলাদার : বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা যুদ্ধ করেছিলেন, সেই মহান ব্যক্তিদেরকে বর্তমান আওয়ামী লীগ এমপিদের হাতেই মাইর খেতে হয়!

সেই আওয়ামী লীগ আর এই আওয়ামী লীগ, সেকাল (১৯৭৫)-আর একাল (২০০৯+) অনেক পরিবর্তন। ২০০৯ সালের নির্বাচনের পরেই অনুমান করেছিলাম বিএনপি বিলীন হবে। ২০১৫-১৬ তে তার বাস্তবতা লক্ষণীয়। মাঠে নেই বিএনপি, বিরোধীদল সরকারের পক্ষে; তাহলে দেশে অরাজকতা তৈরি করছে কারা?

দেশব্যাপী দলীয় কোন্দল তার জন্য দায়ী নয়কি? নিজ গ্রুপের পাল্লা ভারি করার জন্য ঐ বিএনপি/জামাতের লোকগুলো আওয়ামী লীগের কোনো একটি গ্রুপের হয়ে কাজ করছে। আর তাদের পক্ষে সাফাই গাইছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। ফলে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্যান্য সংগঠনে ছাত্রদল/শিবিরের অনুপ্রবেশ হচ্ছে। আর এই অনুপ্রবেশকারী ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের হাতে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা নিরাপদ নয়। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের মারলে বদনাম হয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের। আর মিডিয়া সর্বদাই অপেক্ষা করে ছাত্রলীগের গন্ধ নিতে।

দোষ করবে আওয়ামী লীগে গ্রুপকারী নেতারা, যাদের প্রধান হাতিয়ার অনুপ্রবেশকারী। আর দোষ হচ্ছে ছাত্রলীগের। যেভাবে বিএনপি জামাতকে দলের টিকেট দেয়া হচ্ছে কিছুদিন পরে “আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ” হুমকির মুখে পড়বে না তার নিশ্চয়তা কী?

যারা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে ছাত্রলীগসহ অন্যান্য আওয়ামী সংগঠনের জন্য কাজ করছে তারাই হুমকির মুখে পড়বে। কেননা অনুপ্রবেশকারীরাই বর্তমানে দলের ভালো অবস্থানে পৌঁছে যাচ্ছে। তারা যতটা চামচামি করতে পারে, আওয়ামী পরিবার থেকে উঠে আসা কোনো কর্মী তার শতকরা এক ভাগ চামচামিও করতে পারে না। এরা আস্থা রাখে দেশরতেœর প্রতি আর অনুপ্রবেশকারী/চামচারা সম্মান দেখায় ভাইয়ের প্রতি।

কোনো উদাহরণ টানতে চাই না। অনুপ্রবেশকারী চামচারা এখন ভালো আছে। দু’দিন পূর্বে দেখলাম পদ্মাসেতুর বড় টেন্ডার হাতিয়ে নিল বর্তমান যুবদল নেতা আর এখন তিনি যুবলীগ হচ্ছে হচ্ছে ভাব। এই ছেলেই যখন যুবলীগের হয়ে কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে আক্রমণ করবে তখন দোষটা কার হবে? মিডিয়ায় শিরোনাম হবে “যুবলীগ নেতার আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধা আহত/নিহত”। এই ছেলে যখন কোনো হিন্দু পরিবারে আক্রমণ করবে! তখন সংবাদের শিরোনাম কী হবে?

কারা হিন্দুদের উপর, মুক্তিযোদ্ধাদের উপর আক্রমণ করছে? ওরা সবাই আওয়ামী কোন্দলের ফসল।

মাঝে মধ্যেই মনে চায় দল ত্যাগ করতে। কিন্তু পারি না ঐ শেখের বেটির জন্য। তাঁর মুখটি দেখলে, তাঁর একটা ছবি দেখলে কোথায় যেন আস্থা খুঁজে পাই। তাইতো ভালোবেসে যাই। দেশরত্নেই যে আস্থা!

বিল্লাল হাওলাদার : সভাপতি, সিঙ্গাপুর ছাত্রলীগ