রিজার্ভ চুরি । ব্যবস্থা নিতে ‘একমত’ তিন প্রতিষ্ঠান

DOLLARবাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, নিউইয়র্ক ফেড এবং সুইফট কর্তৃপক্ষ। তারা অর্থ উদ্ধার ও দোষীদের আইনের আওতায় আনতে এক সঙ্গে কাজ করবে। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুরক্ষারও উদ্যোগ নেবে।

গত মঙ্গলবার (১০ মে) সুইজারল্যান্ডের ব্রাসেলস শহরে অনুষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিদের মধ্যে এক ত্রিপক্ষীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সাইবার ও অবকাঠামোগত দুর্বলতার ব্যাপারে পর্যালোচনা করা হয়। অর্থ উদ্ধারে সহযোগিতার পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতিকে এ রকম সাইবার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, সভায় লেনদেন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে গভর্নর ফজলে কবীর ও নিউইর্য়ক ফেড-এর প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ডাডলি নেতৃত্ব দেন।

এদিকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরিতে তিনটি হ্যাকার গ্রুপের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে, সিলিকন ভ্যালির সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ফায়ারআই। এর মধ্যে পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার দুটি। তবে হ্যাকাররা নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোন দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে, তা এখনও নিশ্চত নয়। ব্লুমবার্গকে এমন তথ্য দিয়েছেন ফায়ারআইয়ের দুই কর্মকর্তা।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয় ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে। বিশ্বজুড়ে আলোচিত অর্থ পাচারের জন্য এতোদিন দোষারোপ করা হয়েছিল চীনা হ্যাকারদের।

বাংলাদেশের হয়ে অর্থচুরির ঘটনা তদন্ত করছে সিলিকন ভ্যালির সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ফায়ারআই। তাদের তথ্য বলছে, রিজার্ভ চুরিতে তিনটি হ্যাকার গ্রুপ জড়িত। যার মধ্যে একটি পাকিস্তানের। পাকিস্তান ছাড়াও রয়েছে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকার গ্রুপ। তবে অন্য গ্রুপটি কারা এবং কোন দেশের, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি। হ্যাকিংয়ে বিষয়ে কথা বলতে ফায়ারআই কর্মকর্তারা যোগাযোগ করেছিলেন পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু কোনও সাড়া পাননি।

তিনটি হ্যাকার গ্রুপ সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোনও দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি এই তদন্ত সংস্থা। তবে ম্যালওয়ার ব্যবহারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ জড়িত বলে সন্দেহ তাদের। একই আশঙ্কা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়েরও।

শ্রীলঙ্কায় পাচার হওয়া দুই কোটি ডলার বাংলাদেশ ফেরত পেলেও ফিলিপাইনের অর্থ ক্যাসিনোতে স্থানান্তর হওয়ায় দেখা দিয়েছে আইনি জটিলতা।