সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

সমাবেশ করতে ইতিবাচক সাড়া দেবে সরকার, আশা বিএনপির

প্রকাশিতঃ ২ নভেম্বর ২০১৬ | ৪:২৮ অপরাহ্ন

BNP-logo৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালনের লক্ষ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি পাবে বলে আশা করছে বিএনপি।

বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ দিবস পালন উপলক্ষে ঢাকার আশপাশের জেলা বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মহাসচিব সংবাদ সম্মেলনে জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানে সমাবেশের বিষয়ে প্রশাসন থেকে কোনো নেতিবাচক জবাব পাননি। তারা আশা করছেন, সরকার ইতিবাচক জবাব দেবে।

এর আগে মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এ দিবস পালনে বিএনপিকে প্রতিহত করা হবে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সব শক্তি এসব অশুভ শক্তিকে যেকোনো মূল্য প্রতিহত করবে।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা মাহবুব উল আলম হানিফের ব্যক্তিগত বা দলীয় মত। এটা সরকারের মনোভাব নয়। সমাবেশের অনুমতি দেবে প্রশাসন। এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকে সমাবেশের ব্যাপারে কোনো নেতিবাচক জবাব বিএনপি পায়নি। বিএনপি আশা করে, সমাবেশের অনুমতি পাওয়া যাবে।

দিবসটি পালনের বিষয়ে সরকার নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেন সমাবেশ না করতে পারেন, এ জন্য তাদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্য স্বৈরাচারী। তারা এখন একদলীয় দৃষ্টিতে রাজনীতিকে দেখছেন। বিএনপি বারবার বলছে, বিএনপি সংঘাতের রাজনীতি চায় না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চায়। দুর্ভাগ্য, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পুরোপুরিভাবে একদলীয় শাসনকে জোর করে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। আওয়ামী লীগ এই জায়গা থেকে সরে আসবে বলে তিনি আশা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের ‍উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, আহমদ আজম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

৭ নভেম্বর দিনটিকে বিএনপি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে। অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দিবসটি মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে।

এর আগে নয়াপল্টনে ভাসানী মিলনায়তনে এক যৌথ সভা শেষে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধান বিচারপতির ক্ষোভ প্রমাণ করে, স্বাধীন বিচার বিভাগকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ওই যৌথ সভা করে।

রিজভী বলেন, সরকারের সিংহাসন টালমাটাল হয়ে গেছে। সরকার জনগণকে চাপিয়ে রাখার চেষ্টা করছে, কিন্তু জনগণ এগিয়ে আসছে। রিজভী অভিযোগ করেন, সরকার বিরোধী দলকে সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। যারা সরকারের সমালোচনা করে, তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে।

জাতীয় প্রেসক্লাবে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ যদি আবার মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে নির্বাচন করার চেষ্টা চালায়, বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করবে। এই ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি রাজপথে নামবে।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মাদ ইব্রাহিম, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।