চট্টগ্রাম: এক ব্যক্তির কাছে বার বার না গিয়ে নতুন করদাতা সৃষ্টির প্রতি মনোযোগী হতে তাগিদ দিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ তাগিদ দেন।
কর কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনারা একই ব্যক্তির কাছে বার বার যাচ্ছেন। একই ব্যক্তির কাছে বাব বার না গিয়ে করের আওতা বাড়াতে হবে। তবেই মেলার উদ্দেশ্য সফল হবে। আমি বিশ্বাস করি, দেশে অন্তত এক কোটি টিআইএনধারী হতে পারে।
তিনি বলেন, ভয়ভীতি না দেখিয়ে বন্ধুসুলভ অবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। আগ্রহীরা যাতে বন্ধুসুলভ পরিবেশে কর দিতে পারে। যাতে উৎসাহিত হয়ে মেলায় নতুন করদাতারা আসে। এই প্রচেষ্টায় আয়কর আরও বাড়বে। রাজস্ব আয় যত বাড়বে উন্নয়ন তত বেশি হবে।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতুতে অর্থ দেবে না বলেছে, তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- আমরা নিজেদের টাকায় করব। রাজস্ব আয় বেড়েছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। আপনারা দিয়েছেন বলেই প্রধানমন্ত্রী বলতে পেরেছেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য ফিরোজ শাহ আলম বলেন, করদাতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কাজ করতে চায়। জাতীয় বাজেটে এক সময় আয়কর বিভাগের অংশগ্রহণ কম ছিল, কিন্তু এখন ৪০ শতাংশ দেওয়া হচ্ছে। ফলে বিদেশি ঋণ নির্ভরতা কমেছে।
তিনি বলেন, করদাতাদের সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের দূরত্ব কমিয়ে আনতে চাই। করদাতাদের সঙ্গে পার্টনারশিপ করতে চাই। কারণ সবার অংশীদারিত্ব সমান হলে কেউ কাউকে ঠকাতে চাইবে না। আমরা নিশ্চিত করতে চাই খুব সহজে কর দেওয়া যায়।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, অনেকেই কর দিতে আগ্রহী হলেও ভয়ে দিতে পারেন না। পাঁচ লাখ টাকার করকে এসেসমেন্ট (মূল্যায়ন) করে ৫০ লাখ টাকায় নিয়ে গেলে চলবে না। যারা কর দেয় তাদের ওপর চাপ না দিয়ে নতুন করদাতা সৃষ্টি করতে হবে।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, প্রতি বছর একজন ব্যবসায়ীর সমান লাভ হবে তা তো না, লসও হতে পারে। কর আদায়ের ক্ষেত্রে এটা বিবেচনায় নিতে হবে। হয়রানি হলে ব্যবসায়ীরা কর দিতে আগ্রহী হবেন না।
মেলা কমিটির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম কর আপিল অঞ্চলের কর কমিশনার মাহবুব হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সংসদ সদস্য সাবিহা মুসা, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা, চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রামের কমিশনার (কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি কে এম জয়নাল আবেদীন, কর কমিশনার মোঃ নজরুল ইসলাম ও প্রদ্যুৎ কুমার সরকার।
প্রসঙ্গত করদাতারা মেলায় তাদের ২০১৬-১৭ করবর্ষের রিটার্ন ও কর জমা দেয়া ছাড়াও ই-টিআইএন নিবন্ধন ও পুনঃনিবন্ধন করতে পারবেন। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এ মেলা সপ্তাহব্যাপী চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। মেলায় প্রতিটি কর অঞ্চলের জন্য পৃথক বুথ রয়েছে। এছাড়া সোনালী ও জনতা ব্যাংকের দুটি বুথও রয়েছে, যাতে করদাতাগণ তাদের আয়কর জমা দিতে পারবেন।