শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১

এবার হুইপ-পুত্রের হুমকির নেপথ্য ঘটনা বর্ণনা করলেন দিদারুল আলম

| প্রকাশিতঃ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ৯:০০ অপরাহ্ন

হিমাদ্রি রাহা : অবশেষে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল হক চৌধুরী শারুনের দুর্ব্যববহার ও হুমকির শিকার দিদারুল আলম চৌধুরী প্রকাশ করলেন সেই হুমকির নেপথ্য ঘটনা।

একুশে পত্রিকাকে দেয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে আবাহনী ক্লাবের এই প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব তুলে ধরেছেন সেই ঘটনা। দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, আবাহনী ক্লাবে জুয়া থেকে প্রতিরাতে ৬ লাখ টাকা করে আয় হয় এবং একাউন্টে জমা হচ্ছে শুনছিলাম তখনই আমি ঐ একাউন্টটা বন্ধ করে দিই। কারণ আমি আবাহনী ফুটবল দলের ব্যাংক একাউন্টের একজন স্বাক্ষরকারী আর এসবের দায়দায়িত্ব পরবর্তীতে আমার নিতে হবে। এছাড়া ক্লাবটির সভাপতি হিসেবে আমি বহুদিন ধরে নেই। সভাপতি হিসেবে আছেন তরফদার রুহুল আমিন। আমি যখন তরফদার রুহুল আমিন সাহেবকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার কোনো স্বাক্ষর ব্যাংকে দেয়া হয়েছে কিনা, উনি বললেন ‘না আমার কোনো স্বাক্ষর তো ব্যাংকে দেয়া হয়নি।’

তখন আমার সন্দেহ হলো। স্বাক্ষরকারীর একজন সামশুল হক চৌধুরী ও দলের টিম ম্যানেজার একাউন্টে লেনদেন করার খবর পাই। ঐ টিম ম্যানেজার একদিন এসে আমাকে জানায়, সামশুল হক চৌধুরী ঐ একাউন্ট থেকে মাঝে মাঝে ১০-১২ লাখ টাকা তুলে নিয়ে যায় এবং তার নির্বাচনী কাজে খরচ করে। এসব কারণেই আমি ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করে দিই। দিদারুল আলম চৌধুরী আরও বলেন, এই প্রসঙ্গে স্টেডিয়ামে একটা অনুষ্ঠানে সামশুল হক চৌধুরীর সাথে আমার আলাপ হয়। উনার সাথে আমার একটা জমি সংক্রান্ত সমস্যা ছিলো।

তো সেদিন (১৭ সেপ্টেম্বর) আমি অফিস থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠেই নিজের থেকেই কল দিয়ে তার ছেলে নাজমুল হক চৌধুরী শারুনকে বললাম, তোমার ফুফাত ভাইয়েরা তোমার আব্বাকে বিভিন্নভাবে উত্তেজিত করছে, তুমি এসে আমার সাথে কথা বলো। আমি বিষয়টা সমাধান করবো। কথাপ্রসঙ্গে সে বললো, ‘আংকেল আপনি আবাহনী ক্লাবের একাউন্টটা কেন বন্ধ করলেন?’ আমি বললাম দেখ এটা আমি তোমার আব্বার সাথে কথা বলবো। সে যখন বার বার বলছিলো এই বিষয়ে, তখন আমি বললাম দেখো আবাহনী ক্লাবের ব্যাংক একাউন্টে আমিও একজন স্বাক্ষরকারী। এই একাউন্টে যদি অস্বাভাবিক লেনদেন হয় তার দায় তখন আমাকেও নিতে হবে। এরপর সে হঠাৎ করেই আমার সাথে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলতে থাকে। যেটা আপনারা ইতোমধ্যে জানেন। সে নাকি আমাকে থাপ্পড় মারবে। রাস্তাঘাটে আমাকে অপদস্ত করে কাপড় খুলবে। সে বলে আপনি ক্ষমতা দেখিয়েছেন তো, আমরা ক্ষমতা দেখালে আপনি এক পার্সেন্টও টিকবেন না। ’ তখন আমি বললাম না আমি ১০০ভাগ টিকবো। কারণ আমি হলাম বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক সন্তান। আর তোমার আব্বা সামশুল হক বিএনপি হয়ে জাতীয় পার্টি, তারপর আওয়ামী লীগে আসছে। এরপর সে আরও অকথ্য ভাষায় কথা বললো। এসব অকথ্য ভাষার প্রত্যুত্তরে আমি শুধু একটা কথাই বলেছিলাম, দেখো তুমি যে ব্যবহার করছো এটাই তোমার বেসিক। তোমার বাবা যে একটা রাস্তার মানুষ তুমি যে রাস্তায় জন্ম নিয়েছো তোমার ব্যবহারই তার প্রতিফলন। আমার ছেলে কোনোদিন তোমার বাবার সাথে এভাবে ব্যবহার করবে না। এখানেই রক্তের পার্থক্য।

দিদারুল আলম বলেন, আমি অনেকদিন ধরেই আমার দলীয় লোক ও ক্লাবের লোকদের বলে আসছিলাম যে, সামশুল হক চৌধুরী এই আবাহনী ক্লাবে সুঁচ হয়ে ঢুকবে ফাল হয়ে বের হবে। আজকে তার প্রতিফলন ঘটেছে। নুরুল ইসলাম বিএসসির মাতো মানুষকেও বিভ্রান্ত করেছে। বিএসসি সাহেব হিসাব চাইতে গেলে তাঁকেও বের করে দেয়া হয় ক্লাব থেকে।

নাজমুল হক চৌধুরী শারুন চুরি করে লন্ডন গেছে উল্লেখ করে দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, সে ভুয়া খেলোয়াড় সেজে লন্ডন গিয়ে বসবাস করেছে। ১৯৮৪ সালের ২০ জানুয়ারি আমার ছেলে মারা যায়। এটা শুনে শারুন আমাকে বলে ‘আংকেল আমার জন্মও ১৯৮৪ সালে। তখন আমি তাকে বললাম তাহলে তো তুমি আমার ছেলে। সেদিন থেকেই আমি তাকে আমার হারানো ছেলের মতো স্নেহ করি। অথচ সেই ছেলেই আমার সাথে দুর্ব্যবহার করলো। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে আমি পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেছি। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলেছে।

একুশে/এইচআর/এটি

এবার হুইপপুত্রের হুমকির নেপথের ঘটনা বর্ণনা করলেন দিদারুল আলম চৌধুরী..বিস্তারিত- https://www.youtube.com/watch?v=LZhS3AoOyII&feature=youtu.be

Posted by একুশে পত্রিকা – Ekushey Patrika on Wednesday, 25 September 2019