আমেরিকার ৩০টি অঙ্গরাজ্যের মুসলিম নেতৃবৃন্দ সম্মিলিত আওয়াজ তুললেন প্রেসিডেন্ট পদে হিলারি ক্লিনটনকে বিজয়ী করার। স্লোগান দিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কল্যাণে হিলারির বিকল্প নেই। বিশ্ব শান্তির স্বার্থেই হিলারিকে প্রেসিডেন্ট চাই’।
স্থানীয় সময় রবিবার দুপুরে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায় ‘আমেরিকান মুসলিম পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি’ তথা ‘অ্যামপেক’র ব্যানারে হিলারি ক্লিন্টনের সমর্থনে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে নারীসহ নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণের ঘটনাটি সকলের দৃষ্টি কাড়ে।
এ সমাবেশে বক্তব্যকালে নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের প্রসপেক্ট পার্ক সিটির মেয়র মোহাম্মদ তাহের খায়রুল্লাহ বলেন, ‘মুসলিম আমেরিকানরা আজ ঐক্যবদ্ধ। ৩৩ লাখ ভোট রয়েছে আমাদের। এই ভোট ব্যাংক কাজে লাগিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মত জাতি ও ধর্ম বিদ্বেষীদের ধরাশায়ী করতে হবে।’
ডেমোক্রেটিক পার্টিতে এশিয়ান-আমেরিকান ককাসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন মুসলিম-আমেরিকানদের ঐক্যবদ্ধ হবার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নেই সকলকে ভোট দিতে হবে হিলারিকে।’
ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য ডেমোক্রেটিক পার্টির নির্বাহী সংস্থার প্রতিনিধি তালাত খান বলেন, ‘ট্রাম্প শুধু মুসলমানদেরই শত্রু নন, তিনি হিসপ্যানিক, আফ্রিকান এবং ইমিগ্র্যান্টদের শত্রু। নারীর প্রতিও তার বিদ্বেষ রয়েছে। তাই আসন্ন নির্বাচনে হিলারিকে বিজয়ী করে ট্রাম্পকে সমুচিত জবাব দিতে হবে।’
ফ্লোরিডার আমেরিকান মুসলিম ডেমোক্রেটিক ককাসের প্রেসিডেন্ট গাজালা সালাম বলেন, ‘এখন সময় হচ্ছে নিজেদের ভোট ব্যাংককে সংহত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির অংশ হবার। ব্যালট যুদ্ধে মুসলিম-আমেরিকানদের অস্তিত্বের জানান দিতে হবে।’
আইওয়া অঙ্গরাজ্য পার্লামেন্টের সদস্য আব্দুল সামাদ বলেন, ‘আমরাও আমেরিকান এবং আমাদেরও ভোটিং পাওয়ার আছে, সেটি ট্রাম্পের মত উদ্ভট মস্তিষ্কের লোকজনকে জানিয়ে দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে সকল ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠির মানুষের নিরাপদ আস্থানা- এ সত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে হিলারিকে বিশাল বিজয় দিতে হবে।’
ক্যানসাস অঙ্গরাজ্য ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা রেহান রেজা বলেন, ‘ফ্লোরিডা, পেনসিলভেনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, আইওয়া, নিউজার্সির মত রাজ্যে মুসলিম ভোটারকে জোটবদ্ধ হয়ে ভোট দিতে হবে হিলারিকে। একইসাথে যেখানেই মুসলিম-আমেরিকান প্রার্থী রয়েছেন, সেখানেই সংঘবদ্ধ শক্তির প্রয়োগ ঘটাতে হবে।’
ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় কমিটির সদস্য খোরশেদ খন্দকার বলেন, ‘সময়ের দাবি হচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঐক্য। কারণ, হিলারি ক্লিনটন হচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ তথা ইমিগ্র্যান্টদের বন্ধু। তাকে জয়ী করার মধ্যদিয়েই বিশ্ব শান্তির পরিক্রমা এগিয়ে নিতে হবে।’
মুসলিম-আমেরিকান সংগঠক গিয়াস আহমেদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান সকল মানুষের অধিকার সংহত করেছে। অথচ ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের নিষিদ্ধ করবেন। তাই তাকে ব্যালট যুদ্ধে এহেন বেসামাল কথাবার্তার উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।’
ডেমোক্র্যাট এন মজুমদার বলেন, ‘সারা আমেরিকার মুসলমানরা আজ ঐক্যবদ্ধ। একইভাবে আফ্রিকান-আমেরিকান, হিসপ্যানিকরাও ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তোলেছেন হিলারির পক্ষে। আমরা অবশ্যই জয়ী হবো।’
ব্যবসায়ী ও সংগঠক জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ‘মুলধারার রাজনীতিতে প্রত্যেককে জোরালোভাবে সম্পৃক্ত হতে হবে। মুসলমান এবং ইমিগ্র্যান্টদের সম্পর্কে ট্রাম্পের বেসামাল কথাবার্তার সমুচিত জবাবদানে আজকের এ কর্মসূচির গুরুত্ব অপরিসীম। এখন থেকে সকলকে হিলারি পক্ষে সোচ্চার থাকতে হবে।’
নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন মাফ মিসবাহ, নার্গিস আহমেদ, জাকারিয়া মাসুদ জিকো, রফিকুল ইসলাম ডালিম, মাজেদা উদ্দিন, আনিস আহমেদ, সোলায়মান আলী প্রমুখ। সকলের হাতে ছিল হিলারিকে ভোটদানের পোস্টার ও প্লেকার্ড।