শেখ মোহাম্মদ জুলফিকার বিপুল : আমরা বলতে চেয়েছি পৃথিবীতে কোনো ডিস্টার্ব শিশু নেই। ডিস্টার্ব প্যারেন্টস অথবা সমাজ থাকতে পারে। সব শিশুই অসাধারণ। মমতাহীন পরিবার বা সমাজ ভবিষ্যতের জন্য নিষ্ঠুর মানুষ তৈরি করে।
আমার পরিচিত একজন যিনি পরীক্ষায় ভালো না করার কারণে নিয়ম করে তার বাচ্চাকে পেটান। দেখা হলেই তাকে সবসময় বলেছি কর্পোরাল পানিশম্যান্ট কাজ করবে না, এটা যেন না করেন। কিন্তু কাজ হয়নি। মনে মনে হয়তো আমার উপর বিরক্তই হতেন। তার বাচ্চাটা যখনই আমাদের এখানে খেলতে আসতো দেখতাম মুখে হাসি নেই আর সারা শরীরে মারের দাগ।
একদিন ভদ্রলোককে বললাম- প্রবলেম কী? উনি বললেন- সারাদিন অফিসের ঝামেলা নিয়ে থাকেন, অনেক পরিশ্রম করেও অফিস-পলিটিক্সের কারণে তার প্রত্যাশিত প্রমোশন হচ্ছে না, আর বাসায় এসে যখন দেখেন বাচ্চারা পরীক্ষায় ভালো করে না তখন মাথা খারাপ হয়ে যায়…
বললাম- মিয়া আপনিওতো তাহলে অফিসে ’ফেইল’। এখন আপনার মা-বাবা এসে যদি এই ফেইলের জন্য মাইর দেয় কেমন হবে? মাইর কি আপনার প্রমোশন এনে দেবে? সমস্যার গভীরে যান, সমাধান চাইলে। আপনার ক্রিটিক্যাল রিজনিং কই গেলো?
যাই হোক কেমন আছে আমাদের শিশু-কিশোররা। মাদক, পর্নগ্রাফির থাবা, স্ট্রাকচার্ড পড়াশোনার সাফোকেশন আর এই পাথুরে নগর। কী করতে পারি আমরা, কীভাবে বাঁচাতে পারি তাদের এ থেকে। বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্রে এসব নিয়ে আমাদের কথোপকথন।
ও আচ্ছা, প্রতিবেশীর ঐ শিশু আজ (বুধবার) এসেছিল। বলল- আঙ্কেল গতকাল আপনাদের ঐ অনুষ্ঠান আমার বাবা দেখেছে, আর বলেছে- এখন থেকে আমাদের আর মারবে না…।
মাঝে মাঝে মনে হয় এসব নিয়ে লেখালেখি, কথা, আড্ডা, এতো যে মুখর হওয়া… এগুলো সব ‘থ্যাংকলেস জব’। কিন্তু এরকম একটা ঘটনা জীবনকে অন্যরকম এক আনন্দের সন্ধান দেয়।
ধন্যবাদ রেহানা বেগম রানু আপাকে ‘নগরে নাগরিক’ অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে কথা বলতে আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। আর বন্ধু আজহারকে; যে চাইতো বড় পরিসরে কথাগুলো হোক।
লেখক : শিশুবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পোর্টিভ-এর কর্ণধার