চট্টগ্রাম : দশ বছর ধরে সক্রিয় থাকা আন্তঃজেলা্ ‘ভোলাইয়া গ্রুপ’ নামের অজ্ঞান পার্টির চার সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এরা বিভিন্ন সময়ে কৌশলে যাত্রিদের জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে অর্থসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র হাতিয়ে নিত, বলছে পুলিশ।
নগরে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় সিএমপি কমিশনারের নির্দেশে গঠিত কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল পাঁচদিন পর নগরের টাইপাস ও পুরাতন রেল স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এর আগে দশ বছরের মধ্যে মাত্র দুইবার আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিলো তারা।
আটকেরা হলেন- চুন্নু (৩৬), মো. জসিম (৩২), নুর ইসলাম (৩৫) এবং মো. আকবর (৩৫)।
শনিবার (২০ জুলাই) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমা সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘ভোলাইয়া গ্রুপ’ নামে পরিচিত অজ্ঞান পার্টির ৪ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে অজ্ঞান করার বিভিন্ন ওষুধ, ওষুধ মেশানো জুস ও মলম উদ্ধার করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন রুট, ঢাকা, কক্সবাজার, নোয়াখালী, বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুরসহ বিভিন্ন রুটের বাসে যাত্রিদের অজ্ঞান করে সর্বস্ব নিয়ে নিত ওরা।
নােবেল চাকমা আরো বলেন, শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে টাইগারপাস মোড় থেকে প্রথমে চুন্নু ও আকবরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে স্টেশন রোড এলাকা থেকে এ চক্রের বাকি দুই সদস্য জসিম ও নুর ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই ভোলা জেলার লালমোহন থানার চর সখিনা গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তাদের দলটি ‘ভোলাইয়া গ্রুপ’ নামে পরিচিত। গত কয়েক বছরে চট্টগ্রাম মহানগরে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র তারা ছিনিয়ে নিয়েছে।
কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, প্রথমে যাত্রিবেশে বাসে উঠে টার্গেট করে তারা। পরে যাকে টার্গট করা হল তার সঙ্গে কথা বলে অবস্থা বুঝে বিশ্বাস জমানোর জন্য নিজের ব্যাগ থেকে বের করে বিস্কুট, চিপস এসব খায়। পরে যাত্রিকে খাওয়ায়। ব্যাগ থেকে জুস বের করে প্রথমে নিজে অর্ধেক খেয়ে ফেলে। পরে যাত্রিকে দেওয়ার সময় কৌশলে ওষুধ মিশিয়ে দেয়। ওষুধ মেশানো জুস খেয়ে যাত্রি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সবকিছু নিয়ে বাস থেকে নেমে পড়ে।
সাম্প্রতিক সময়ে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে ১৯ জন ব্যক্তি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন, অভিযান পরিচালনাকারী টিমের সদস্য এসআই সজল দাশসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে/এসসি