আবদুল মান্নানকে এ সময়ের ‘দার্শনিক’ বললে অত্যুক্তি হবে না

এম আনোয়ার হোসেন : ‘কেবলই পেছনে তাকাই’ কথাসাহিত্যিক মো. আবদুল মান্নান (স্যার) এর জুলাই মাসের প্রথম লেখা। এটি যেমন ঠিক তেমনি এরইমধ্যে জাতীয় দৈনিকে তাঁর অন্য একটি প্রবন্ধও প্রকাশিত হয়েছে।

বিভিন্ন সংবাদসূত্রে দেখেছি, গত সপ্তাহখানেকের মধ্যে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগের প্রায় জেলাগুলো সফর করেছেন। বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা থেকে শুরু করে অন্যদিকে বান্দরবান, কক্সবাজার জেলা সফর করেছেন।

তাই স্বাভাবিকভাবে আশা ছিল, এ বৃহৎ ও দীর্ঘ সফরের একটি লেখা আসবে। কথাসাহিত্যিকের অনেক পাঠক সেটা পায়নি। পাঠকের মন বলেও তো একটা বিষয় রয়েছে। যেহেতু তিনি কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গা আশ্রিত এলাকা পরিদর্শন করে এলেন এ সময়। তা সত্ত্বেও আমরা কিন্তু নতুন নিবন্ধ পেয়েছি। এ জন্যে তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।

‘কেবলই পিছনে তাকাই’ এ প্রবন্ধের মুল আলোচনা মানুষ কিংবা মানবজাতির স্মরণশক্তি সম্পর্কিত। অবশ্যই মেডিকেল সায়েন্সের অনেকে বলে থাকেন, মানুষের স্মৃতিশক্তি দু’ভাবে কাজ করে। যেমন শর্ট টার্ম মেমোরি এবং লং টার্ম মেমোরি। এখানেও তিনি আমাদেরকে নতুন ধারণা দিয়েছেন। ধারণা দিয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ মানুষের স্মৃতিশক্তির ক্রিয়া বিষয়ে। যা পঞ্চাশের পুর্ববয়সী মানুষের জন্যে অনেকটা সতর্কবাণী হিসেবে কাজ করতে পারে।

অপরদিকে উপরোক্ত বিষয়টিকে দৃঢ় করা করার ক্ষেত্রে তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন উপমা টেনেছেন। পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন তথ্য এনে স্বীয় মাতৃভূমি প্রেমের উদাহরণ সৃষ্টি করেন। এছাড়াও প্রকাশ পেয়েছে এক সময় সংগীতের প্রতি ভীষণ প্রীতি। তাতে ফুটে উঠেছে বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন দর্শন।

তাঁর বিভিন্ন প্রবন্ধ-নিবন্ধে সমকালীন প্রয়োজনীয়তা, সমস্যা, জীবনবোধসহ নানা বিষয় তাঁর রচনায় উঠে আসে। জীবন ও জগত সম্পর্কিত মৌলিক সমস্যাবলীর যৌক্তিক অনুসন্ধান করা যদি দর্শন হয়, তবে তাঁকে এ সময়ের একজন দার্শনিক বললে তেমন অত্যুক্তি হবে না।

আমি মাঝে মাঝে আশ্চর্য হই, পৃথিবীতে মানুষ যখন টাকা কিংবা অর্থ-বিত্তের খেলায় বিভোর ঠিক এমন একটি সময় তিনি সাহিত্য, দর্শন নিয়ে মত্ত। এমন মানুষগুলোর জীবন দীর্ঘ হওয়া প্রয়োজন।

একুশে/এএএইচ/এটি

এম আনোয়ার হোসেন : লেখক-সাংবাদিক