হিমাদ্রি রাহা : কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফরে গিয়ে রোহিঙ্গা সংগঠন ও তাদের নেতাদের সাথে গোপন বৈঠক করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। স্থানীয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কয়েকজন নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একুশে পত্রিকাকে। তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সফরের বিষয়ে কোনো কিছুই জানে না কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক নেতা জানান, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ইউএনএইচসিআর’এর একজন প্রতিনিধি রোববার (৩০ জুন) বেলা ২.৩০ মিনিটে ক্যাম্প-২ এ প্রবেশ করেন। এরপর তারা সেখানে রোহিঙ্গা সংগঠন রোহিঙ্গা ভয়েস, এআরএফ, রোহিঙ্গা নারীদের সংগঠন শান্তি মহিলা টিম ও কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা ও ক্যাম্প-২ এর রোহিঙ্গা প্রধান সিরাজুল মোস্তফার সাথে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা বৈঠক করেন। এরপর পৌনে ৪টায় তারা ক্যাম্প ত্যাগ করেন।
কী বিষয়ে কথা হয় জানতে চাইলে বৈঠকে উপস্থিত ক্যাম্প-২-এর রোহিঙ্গা প্রধান সিরাজুল মোস্তফা একুশে পত্রিকাকে জানান, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর উপর চলমান সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, আমেরিকার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে যাতে করে রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে ও নিরাপদে বসবাস করতে পারে। এজন্য তারা মিয়ানমার সরকারকে কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করবে। এছাড়া ক্যাম্পে যাতে কোনো ধরনের চরমপন্থী সংগঠনের বিস্তার না ঘটে ও মাদকের সাথে যেন জড়িয়ে না পারে সে ব্যাপারেও শরণার্থীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
রোহিঙ্গা সংগঠনের সাথে গোপন বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম একুশে পত্রিকাকে জানান, দেখুন এখানে গোপন কিছু নেই। মার্কিন রাষ্ট্রদূত এখানে নিয়মিত পরিদর্শনে আসেন। তারই অংশ হিসেবে রোববার (৩০ জুন) তিনি উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি সেখানকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে কথা বলেন। তবে কোনো সংগঠন বা নেতার সাথে গোপন বৈঠকের কিছু ঘটেনি।
এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এনডিসি একেএম লুৎফুর রহমান জানান, কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত যদি ক্যাম্প পরিদর্শনে আসে তবে সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনার অফিস থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করতে হবে। এধরনের কোনো আবেদন বা চিঠি আমরা পাইনি। তাই এই বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারছি না। তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এইধরনের ক্যাম্প পরিদর্শন ও গোপন বৈঠক কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।
প্রসঙ্গত, রোববার (৩০ জুন) সকাল সাড়ে নয়টার একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার ফ্লাইটে কক্সবাজার পৌঁছান মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। এসময় তার সাথে ছিলেন তাঁর সিকিউরিটি স্টাফ, কংগ্রেশনাল স্টাফ ও রিফিউজি কো-অর্ডিনেটর। সোমবার (১ জুলাই) সকাল সাড়ে নয়টার ফ্লাইটে তিনি ঢাকার উদ্দ্যেশে কক্সবাজার ত্যাগ করেন।
একুশে/এইচআর/এটি