ঢাকা : তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে পাবনার ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলির মামলার আসামি ৩০ বিএনপি নেতাকর্মীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানাের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ মামলার প্রধান আসামি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর দুলাল এদিন আদালতে হাজির না থাকায় তাদের বিরদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন বিচারক।
রোববার (৩০ জুন) এ মামলার সাক্ষ্য ও জেরা শেষে পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোস্তম আলী এই আদেশ দেন।
এ আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক জানান, বিচারক সোমবার এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির দিন রেখেছেন। যুক্তিতর্ক শেষ হলেই মামলাটি রায়ের পর্যায়ে যাবে।
১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ট্রেনমার্চ করার সময় পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে তখনকার বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনের বগি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়।
তবে ওই ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যান আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
হামলার ঘটনায় রেলওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে ১৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করলেও বিএনপির আমলে তদন্ত এগোয়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তদন্ত গতি পায়।
তদন্ত শেষে পুলিশ মোকলেছুর রহমান বাবলু, জাকারিয়া পিন্টুসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলায় শুনানি করছেন পিপি আক্তারুজ্জামান মুক্তা। অন্যদিকে আইনজীবি নুরুল ইসলাম গ্যাদাসহ কয়েকজন আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা সাংগঠনিক সফরে খুলনা থেকে রাজশাহী অভিমুখে ট্রেনযোগে বের হন। পথিমধ্যে তিনি বিভিন্ন স্থানে পথসভা করেন। ঈশ্বরদী স্টেশনে তার একটি নির্ধারিত পথসভা ছিল। তাকে বহনকারী ট্রেনটি পাকশী স্টেশনে পৌঁছার পরপরই ওই ট্রেনে ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ওইদিনই একটি মামলা দায়ের করেন। ৩ বছর পর ১৯৯৭ সালে ৩ এপ্রিল পুলিশ মোট ৫২ জনের নামে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করে। আসামিরা ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। ৫২ আসামির মধ্যে ৬ জন মারা গেছেন।
একুশে/এসসি