রিফাত হত্যা : রাম দা হাতে নয়ন ২০ মামলার আসামি !

বরগুনা : রিফাত হত্যার প্রধান খুনি নয়নের পরিচয় জানতে নিজ নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করছেন অনেকে। জানা গেছে, ভিডিওতে যে যুবক নিহত রিফাতকে ধারালো কোপাচ্ছিল তার নাম সাব্বির হোসেন নয়ন। এলাকায় সে ‘নয়ন বন্ড’ নামেও পরিচিত। স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের বাসায় মাঝে মাঝে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে নয়ন। মামলার আরেক আসামি রিফাত ফরাজী সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। নয়ন বরগুনা শহরের ধানসিঁড়ি এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকির ছেলে। তার বিরুদ্ধে ৮টি মাদক, ৩টি চুরি মামলাসহ কমপক্ষে ২০টির উপর মামলা রয়েছে।

বরগুনা সরকারি কলেজ এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে ধারালো রাম দা দিয়ে স্ত্রীর সামনে তার স্বামী নেয়াজ রিফাত শরিফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ইতোমধ্যে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়াও।

ঘটনার সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নি জানান, ডিভোর্সের পর নয়ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি পোস্ট দিতে থাকে। এ নিয়ে নয়নের সাথে রিফাতের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তিনি বলেন, এদিন আমি আমার স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা সর্বাত্মক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। আমি ঘটনার সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

অন্যদিকে নয়নের মা সাজেদা বেগম বলেন, প্রায় সাত মাস পূর্বে নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা আক্তার মিন্নির সাথে তার ছেলে নয়নের বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই নিজেদের মধ্যে কলহ দেখা দিলে মিন্নি তার ছেলেকে ডিভোর্স দেয়। মিন্নির সাবেক স্বামী তার ছেলে নয়ন।

এদিকে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় চন্দন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল নয়টায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গতকাল বুধবার নিহত রিফাতের বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবীর মোহাম্মদ হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চন্দন এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

রিফাত শরীফ গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর স্ত্রী আয়েশা আক্তারকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তাঁরা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।

একুশে/ডেস্ক/এসসি