এলাকায় কোনো সন্ত্রাসী রাখবেন না এমপি!

চট্টগ্রাম : শুক্রবার বিকেল ৪টা। সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রাইভেট কার নিয়ে এমপি নজরুল ইসলামের চন্দনাইশের বাড়িতে হাজির হন রায়জোয়ারা গ্রামের একদল মানুষ।

অভিযোগ, সন্ত্রাসী সাইফুলের নেতৃত্বে দু’দফায় হামলা করে প্রাইভেট কার ভাংচুর এবং সাড়ে চার লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। করেছে মারধর।

হামলা এবং ক্ষতির শিকার হওয়া আব্দুর রহিম স্থানীয় জঙ্গলশাহ জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং নগরের টেরিবাজারস্থ কাপড়ের দোকান ‘রাজস্থান’ এর মালিক।

হামলার বর্ণনা এবং ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি দেখে বেজায় ক্ষুব্ধ হলেন এমপি। এপিএস সুব্রত বড়ুয়াকে বললেন ওসিকে ফোন লাগাতে। এপিএস জানালেন, ইতিমধ্যে বিষয়টা নিয়ে তিনি ওসির সাথে কথা বলেছেন। এরমধ্যে ওসি ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠিয়েছেন, ওসি সাহেব পজিটিভলি দেখছেন বিষয়টি। তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি এমপি। বললেন, এখনই ফোন লাগাও, আমি কথা বলবো।

ওসিকে ফোনে ধরিয়ে দেয়া হলো। এমপি বললেন, যারা এই সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা যেই হোন না কেন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি তাদের গ্রেফতার দেখতে চাই। বলেন, আমার এলাকায় কোনো সন্ত্রাসী থাকতে পারবে না। এসময় ওসিকে বাড়িতে জরুরি তলব করেন এমপি।

একইসময়ে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ক্ষতিগ্রস্ত আরেকটি পক্ষ হাজির হলেন এমপির বাড়িতে। এমপি তাদের অপেক্ষা করতে বলে শহর থেকে আসা কয়েকজন অতিথি নিয়ে ভেতরে গেলেন। তাদের আতিথেয়তার পাশাপাশি নানা সমস্যা নিয়ে আসা লোকদের জন্য ভেতর থেকে নুডলস, চা, চানাচুর পাঠালেন।

চা খেতে খেতে সাহায্যপ্রার্থী একজন বললেন, এমপি সাহেব এমনই। সবাই তার কাছে আসে। খালি হাতে, খালি মুখে কেউ ফিরে না। এমপির বাড়িটাই যেন থানা, এমপির বাড়িটাই যেন কোর্টকাচারি, ভূমি অফিস। কেউ মার খেয়েছে, নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে যাচ্ছে এমপির কাছে, কেউ ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে, কেউবা অবিচারের শিকার হয়ে এমপির কাছে ছুটে যাচ্ছেন। এককথায় এমপির বাড়িটাই যেন চন্দনাইশের আপামর মানুষের আশ্রয়, নির্ভরতার অপার ঠিকানা।

সব ঝামেলা কাধে নেন কেন, কিছু তো এড়িয়ে চলা যায়, প্রায় এমপি যেভাবে করেন- এমন প্রশ্নে চট্টগ্রাম ১৪ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম ইসলাম চৌধুরী একুশে পত্রিকাকে বলেন, স্কুলজীবন থেকে রাজনীতি করছি জনকল্যাণের ব্রত নিয়ে। জনগণের ভোটে আমি দুদুবার এমপি, ২০১৪ থেকে সংসদে আছি। তাদের সেবা দেয়া, সাধ্যমতো তাদের পাশে থাকাই আমার একমাত্র ব্রত। আমার ধ্যানজ্ঞান। এখানে আমি শান্তি পাই, স্বস্তি খুঁজি।

আমার খুব বেশি আড়ম্বর জীবন নয়। বৈষয়িক প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাবটুকুও কম। ফলে এলাকার জনগণকে সময় দেওয়া, ঘুরে ঘুরে তাদের সুখ-দুঃখের খবর নেয়ার সুযোগ আমার অন্যদের চেয়ে বেশি। সেই সুযোগটাই মূলত আমি কাজে লাগাই, লাগানোর চেষ্টা করি।

একুশে/এসসি/এটি