আয়নাবাজি দেখতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়

ainabaziনজীব চৌধুরী: চট্টগ্রাম মহানগরীর দ্বিতীয় বৃহৎ সিনেমা হল আলমাসে সদ্য মুক্তি পাওয়া মনস্তাত্ত্বিক ও রোমাঞ্চকর চলচ্চিত্র গাউসুল আলম শাওনের গল্পে এবং অমিতাভ রেজা’র পরিচালনায় চঞ্চল চৌধুরী, মাসুমা রহমান নাবিলা ও পার্থ বড়ুয়ার প্রধান চরিত্রে আয়নাবাজি দেখতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অবস্থাদৃষ্টে হল কর্তৃপক্ষ অগ্রিম টিকেট বিক্রির জন্য অতিরিক্ত কাউন্টারও খুলেছে। টিকেটের মূল্য পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। কিছু কিছু বিদেশি দর্শককেও লক্ষ করা গেছে।

আয়নাবাজি’তে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী (আয়না), মাসুমা রহমান নাবিলা (হৃদি), পার্থ বড়ুয়া (সাবের)। অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ (এসিপি সাজ্জাদ) এবং পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন লুৎফর রহমান জর্জ, বৃন্দাবন দাস, গাউসুল আলম প্রমুখ।

সম্পূর্ণ ছবিটির দৃশ্যায়ন করা হয়েছে রাজধানী ঢাকা শহরে। ছবিটির মূল প্রতিবাদ্য হচ্ছে, শারাফাত করিম আয়না (চঞ্চল চৌধুরী) সুনিপুণ অভিনয়ের মাধ্যমে তার জীবনবাজি খেলা থেকে আয়নাবাজি ছবিটির টাইটেল নামকরণ করা হয়েছে। আয়না’র সাধারণ অভিনয় হচ্ছে শিক্ষক। কিন্তু তিনি সমাজে খন্ডকালীন জাহাজের কুকের ছদ্মবেশে লুকিয়ে থাকা এক অপরাধী। অপরাধের জগতে তার বিচরণ হলো অন্য বড় দাগী আসামীদের হয়ে ভাড়াটে হিসেবে জেল খাটা। যে-চরিত্রটি বাংলাদেশে খুব বিরল, সেই চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন। তিনি আবার অভিনয়ের শিক্ষক বিধায় তার ক্লায়েন্টদের অঙ্গভঙ্গিও সুনিপুণভাবে অনুকরণ করতে পারত। আয়না এখানে বহুরূপী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সমাজে সাধারণের চোখ ফাঁকি দিতে পারলেও এক হতাশাগ্রস্ত সাংবাদিক ক্রাইম রিপোর্টার (পার্থ বড়ুয়া) সত্য উৎঘাটন করার জন্য আয়নার পিছু নেয়। অন্যদিকে, আয়না হঠাৎ করে পাড়ায় নতুন আসা মেয়েটির (নাবিলা) প্রেমে পড়ে এবং উভয়ই প্রেমে জড়িয়ে যায়। ক্ষমতা আর টাকার জোরে সমাজে বড় বড় অন্যায় ও অপরাধীদের এভাবে পার পেয়ে যাওয়ার খেলায় আয়না তার আয়নাবাজি আর কতদিন করতে পারবে? ছবিটিতে এই বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে।

এদিকে আলমাস হলে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া শো চার শিফটে রাত ১২টা পর্যন্ত ছবিটির প্রদর্শনী লক্ষ্য করা গেছে। হলে বেশিরভাগ দর্শক তরুণ প্রজন্ম আর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। কয়েকজন দর্শকের সাথে আয়নাবাজি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘অনেকদিন পর আমরা সুরুচিপূর্ণ সামাজিক ও বিনোদনমূলক ছবি দেখতে পেলাম। ছবিটির এ-টু-জেড ও চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত বহুরূপী চরিত্রগুলো খুব ভালো লেগেছে।’ তবে তার আয়নাবাজি চরিত্রটিতে চঞ্চল প্রকৃত আসামীদের হয়ে টাকার বিনিময়ে প্রক্সি দিয়ে জেল খাটত। এই চরিত্রটি আমাদের সমাজে বিরল। তাদের অভিমত হলো, ছবিটির এই আয়না চরিত্রের নেতিবাচক প্রভাব হয়ত আমাদের সমাজে পড়তে পারে। কারণ ক্রিমিনালরা নতুন এক অপরাধের সিস্টেম জেনে গেছে।

আলমাস হলের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আয়নাবাজি ছবিটা প্রদর্শনীতে এনে আমরা বর্তমান মধ্যবিত্ত শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মকে দেশীয় চলচ্চিত্র দেখার ব্যাপারে হলমুখী করতে সক্ষম হয়েছি। দর্শকদের প্রবল আগ্রহ বিবেচনায় আমরা ছবিটি কয়েক সপ্তাহব্যাপী হলে প্রদর্শনীতে রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’