ঢাকা : ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন আগাম জামিন নিতে হাইকোর্টে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন বলে আদালত সুত্র জানিয়েছে। মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় আগাম জামিনের আবেদনও করেছেন বলে জানা গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি ধারায় (২৬, ২৯ ও ৩১) ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে পিবিআই।
ওসির পক্ষে অ্যাডভোকেট সালমা সুলতানা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
পরে একজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেছেন।
এর আগে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গত সোমবার (২৭ মে) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত।
সোমবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গত ২৭ মার্চ বেলা ১টা ১৮ মিনিটে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন দিয়ে থানায় আসা ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের বক্তব্য ধারণ করেন। এতে নির্যাতনের শিকার মেয়েটির ব্যক্তিগত পরিচিতির তথ্য প্রকাশ পায়। এই অপরাধে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৬ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। মোয়াজ্জেম এই ভিডিও ৮ এপ্রিল শেয়ারইট অ্যাপের মাধ্যমে ‘সজল’ নামের একটি ডিভাইসে পাঠান। এতে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় সামাজিক অস্থিরতার সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটার উপক্রম হয়। এর মাধ্যমে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩১ ধারায় অপরাধ করেছেন।
আইনবহির্ভূতভাবে নুসরাত জাহানকে জেরা করে এর ভিডিও প্রচারের অভিযোগে ১৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক বাদী হয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা গ্রহণ করার জন্য আবেদন করেন। আদালত ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এই মামলার তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানালে শুনানি শেষে বিচারক গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন আবেদনটি দাখিলের পর সেটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।
একুশে/ডেস্ক/এসসি