ঢাকা : নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (প্রত্যাহার) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই সদর দফতরের সিনিয়র এএসপি রিমা সুলতানা। ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার তদন্ত শেষে আজ (রোববার) সাইবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (প্রত্যাহার) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এতে অভিযোগ করা হয়, গত ২৭ মার্চ রাফিকে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এমন অভিযোগ উঠলে দুজনকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করতে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না। ভিডিওটি প্রকাশ হলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওসির সখ্যতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, থানার ওসির সামনে অঝোরে কাঁদছিলেন নুসরাত। সেই কান্নার ভিডিও করছিলেন সোনাগাজী থানার ওসি। নুসরাত তার মুখ দুই হাতে ঢেকে রেখেছিলেন। তাতেও ওসির আপত্তি। বারবারই ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে। ভিডিওতে দেখা যায় ওসি মোয়াজ্জেম অত্যন্ত অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষায় একের পর প্রশ্ন করে যাচ্ছেন নুসরাতকে। নুসরাতের বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে কী-না এমন প্রশ্নও করতে দেখা যায় ওসি মোয়াজ্জেমকে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওসি মোয়াজ্জেম অনুমতি ছাড়া নিয়মবহির্ভূতভাবে নুসরাতকে জেরা এবং তা ভিডিও করেন। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় করা অভিযোগটি পিটিশন মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন আদালত।
পিবিআই সদর দফতরের সিনিয়র এএসপি রিমা সুলতানা বলেন, তদন্তে থানায় বক্তব্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়াসহ প্রত্যেকটি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। তদন্তে প্রমাণিত সব তথ্য উপাত্তসহ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে।
একুশে/ডেস্ক/এসসি