‘চাঁদপুরের মতো সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে দেশের সকল গ্রাম-আদালত’

ঢাকা : সম্প্রতি ঢাকার বিয়াম ফউন্ডেশনে অনুষ্ঠিত হল বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের বাৎসরিক রিভিউ সভা। সভায় চাঁদপুর সহ প্রকল্পাধীন মোট ২৭ জেলার স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালকগণ অংশগ্রহণ করেন। এতে আরো অংশগ্রহণ করেন উক্ত জেলাসমূহের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর ও প্রকল্পের সহযোগী সংস্থার প্রকল্প সমন্বয়কারীগণ সহ জেলা সমন্বয়কারীবৃন্দ।

সভায় বিভিন্ন জেলার মাঠ-পর্যায়ের বাস্তবতা ও চ্যালেন্জ নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় বক্তাগণ বলেন, দেশের গ্রাম আদালতগুলো সক্রিয় করতে পারলে এলাকার সাধারণ মানুষ বিশেষ ক’রে নারী ও অসহায় জনগোষ্ঠী অতি সহজে ও স্বল্প সময়ের মধ্যে ন্যায়-বিচার পেতেন।

বাৎসরিক রিভিউ সভায় চাঁদপুরের স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান, ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর নিকোলাস বিশ্বাস এবং সহযোগী সংস্থা ব্লাষ্টের জেলা সমন্বয়কারী মোঃ আমিনুর রহমান অংশগ্রহণ করেন। তারা চাঁদপুরের গ্রাম আদালতের বাস্তবতা ও বিভিন্ন চ্যালেন্জ তুলে ধরেন।

চাঁদপুরে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণের জন্য প্রকল্প ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা বিস্তারিতভাবে রিভিউ সভায় তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল: প্রকল্পাধীন ৪৪টি ইউনিয়নের সকল জামে মসজিদে খতিব/ইমামদের মাধ্যমে শুক্রবার জুমার দিনে নিয়মিতভাবে প্রতি মাসে অন্তত একবার গ্রাম আদালত বিষয়ক তথ্যপ্রচার, এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে মাইকিং, স্থানীয় ক্যাবল ডিসের মাধ্যমে গ্রাম আদালতের প্রচারণা, ভিডিও-শো প্রদর্শন, ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত বিষয়ক ফেস্টুন প্রতিস্থাপনসহ অন্যান্য উদ্যোগ।

এছাড়াও গ্রাম আদালতের সাথে সম্পৃক্ত অংশীদারদের সাথে বিশেষ করে ইউপি চেয়ারম্যান, সচিব ও গ্রাম আদালত সহকারীদের সাথে সরাসরি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় যা গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এবং গ্রাম আদালতের প্রতি অংশীদারদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করছে। রিভিউ সভায় আরো বলা হয় যে, চাঁদপুর সহ দেশের বিভিন্ন “সংবাদ-মাধ্যম” গ্রাম আদালতের প্রচার-প্রচারণায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

গ্রাম আদালতের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বৃদ্ধি এবং গ্রাম আদালত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতকরণে ইউনিয়ন পরিষদে সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দুই দিন গ্রাম আদালতের শুনানীর ব্যবস্থা ও ইউপি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে যাতে পরিষদের যে কোনো প্যানেল সদস্য গ্রাম আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারেন তার সুব্যবস্থা করার জন্য ইতিমধ্যেই স্থানীয় সরকার জেলা শাখা থেকে অফিস অর্ডার জারি করা হয়েছে।

গৃহিত এ সকল পদক্ষেপের কারণে চাঁদপুরে গ্রাম আদালত দিন দিন জনবান্ধব হয়ে উঠছে এবং মামলা গ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে উচ্চতর আদালতে মামলার চাপ হ্রাস পাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ অহেতুক ভোগান্তি থেকেও রেহাই পাচ্ছেন।

একুশে/প্রেসবিজ্ঞপ্তি