মোশাররফ ভাই আমাদের মুরুব্বী, প্রিয়জন : ডা. আফছারুল

চট্টগ্রাম : ২০১৬ সালের ৯ এপ্রিলের ঘটনা। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে নগরে গণপরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তৎকালীন গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন ডা. আফছারুল আমীন। উপস্থিত সিটি মেয়র ও অন্যদের হস্তক্ষেপে সেই ঘটনা ‘অঘটনে’ পরিণত না হলেও সেদিনের হট্টগোল, তেড়ে যাওয়ার ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে দেশ-বিদেশে।

সেই থেকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও আফছারুল আমীনকে একসাথে খুব বেশি দেখা যায়নি। কোনো অনুষ্ঠানে, উৎসেব মুখোমুখি হলেও স্রেফ কুশল-বিনিমেয়র বেশি কিছু হতো না দুই নেতার মাঝে। ফলে রাজনীতি-সংশ্লিষ্টদের কৌতূহল, তাঁদের মাঝে সৃষ্ট দুরত্ব, মান-অভিমান আদৌ কেটেছে কিনা।

সেদিনের ঘটনার পর রাজনীতি-সংশ্লিষ্টেদর অনেকেই মনে করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের চির রাজনৈতিক শক্রতে পরিণত হতে যাচ্ছেন ডা. আফছারুল আমীন। এমনও শোনা গেছে, কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থাকায় রাজনীতিতে ডা. আফছারুলের পথের কাটা হয়ে উঠতে পারেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ। আড়ালে-আবডালে সেই চেষ্টা হয়েছে বলেও জনশ্রুতি আছে।

এ পরিস্থিতিতে শনিবার (৩০ মার্চ) নগরের থিয়েটার ইনস্টিউটে স্বাধীনতা-পদক প্রাপ্তিতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ডা. আফছারুল আমীন উপস্থিত হয়ে তাদের মাঝে কোনো দুরত্ব নেই সেটাই কেবল জানান দিয়েছেন তা নয়, বললেন মোশাররফ ভাই আমাদের সকলের মুরুব্বী, প্রিয়জন। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের অনবদ্য অবদান গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন ডা. আফছারুল আমীন।

তিনবছর আগের অনভিপ্রেত ঘটনার পর আজকেই ঘটা করে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের মুখোমুখি কিনা জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি, চট্টগ্রাম-১০ আসনের সাংসদ ডা. আফছারুল আমীন একুশে পত্রিকাকে বলেন, ওই ঘটনার পরও উনার সাথে আমার সংসদে কথা হত, লবিতে কথা হত। আপনারা ব্যাপারটা যেভাবে দেখছেন এমন কিছুই না আসলে। মোশাররফ সাহেব একজন মুক্তিযোদ্ধা, প্রধানমন্ত্রী তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়েছেন। তাছাড়াও তার জীবনে ঘটে যাওয়া বীরত্বের ঘটনাগুলো তো সবাই শুনেছেন, আমরা দেখেছি, শুনেছি। উনার এ পুরস্কার মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের জন্য গৌরবের বিষয়। আমরা সবাই এ গৌরবের অংশীদার- বলেন ডা. আফছারুল আমীন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরেণ্য সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, মাঈন উদ্দিন খান বাদল এমপি, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুস সালাম এবং মুক্তিযোদ্ধারা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

একুশে/এটি