রেহানা বেগম রানু : দুর্নীতি দমন কমিশন যখন দেশে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে প্রশংসা কুড়াচ্ছে, তখনই সংস্থাটির মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরীকে বদলি করে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে পাঠানো হলো।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক আশার সঞ্চার করেছিল। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক এবং এনফোর্সমেন্ট টিমের প্রধান মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর অভিযানগুলো ছিল ব্যাপক প্রশংসিত।
ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক, সরকারের ভূমি উদ্ধার, প্রভাবশালীদের কাছ থেকে সরকারি গাড়ি উদ্ধারসহ বেশ কিছু কাজ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেন তিনি।
তার একের পর এক অভিযানে ভেঙে যায় বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতির সিন্ডিকেট। দুদকের হটলাইন ১০৬ নম্বরে অভিযোগ পাওয়ার পরই তিনি বিভিন্ন দপ্তরে হানা দিয়েছেন।
শোনা যায়, বড় দুর্নীতিবাজ বা রাঘব-বোয়ালরাই তাকে বদলির জন্য বেশ কিছু দিন ধরে সক্রিয়। তার বদলির ঘটনায় বিভিন্ন সরকারি অফিসে দুর্নীতিবাজরা গোপনে মিষ্টি বিতরণ করেছেন বলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
এ ঘটনা বঙ্গবন্ধুকন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধকে ব্যাহত করবে নিঃসন্দেহে। আমি মনে করি, সরকারের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাবিরোধী; সরকারের অভ্যন্তরে ঘাঁপটি মেরে থাকা সেই মহলটিই সরকারের উচ্চমহলকে ভুল বুঝিয়ে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠন করে বিশ্বনন্দিত হবার মূল এজেণ্ডাটির হাত-পা বাধতে চায়। এই ঘটনায় ভেংগে যেতে পারে দুদকের অন্য সৎ, সাহসী অফিসারদের মনোবলও।
কী সেলুকাস! দুর্নীতি ও দারিদ্র্যকেই পাঠানোর কথা ছিল জাদুঘরে; অথচ পাঠানো হলো সততাকে!!
এরপরও আমার বিশ্বাস, দুর্নীতিবাজদের আতংক, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নায়ক, সততার অতন্দ্রপ্রহরী মুনীর চৌধুরীকে সরকার স্বপদে ফিরাবেই।
লেখক : আইনজীবী, নারীনেত্রী, প্রাক্তন কমিশনার, চসিক।