চট্টগ্রামে এবি ব্যাংকের ১৩৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ, মামলা

চট্টগ্রাম : বেসরকারি আরব-বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংক চট্টগ্রামের পোর্ট কানেকটিং রোড শাখা থেকে ১৩৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২ ব্যাংকার ও এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক।

মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের হালিশহর থানায় নিজে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন তিনি।

এ মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে এরা হলেন, আরব বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক এসভিপি ও ক্রেডিট ইনফরমেশন মনিটরিংয়ের ইনচার্জ মো. আজাদ হোসেন, ব্যাংকটির ইভিপি ও পোর্ট কানেকটিং রোড শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দিন এবং চট্টগ্রামের ইয়াসির এন্টারপ্রাইজের মালিক মোজাহের হোসেন।

সুত্র জানায়, মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয়, আসামিরা প্রতারণার মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বৈদেশিক ঋণপত্রের (এলসি) মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী আমদানি ও স্থানীয় ঋণপত্রের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী কেনা এবং ওই সব মালামাল বিক্রি করে ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্তমতে নির্ধারিত সময়ে ব্যাংকে টাকা জমা দেননি। এভাবে সুদসহ মোট ১৩৩ কোটি ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৬১৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক লুৎফুল কবির চন্দন বলেন, দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধানের ভিত্তিতে এ মামলা হয়েছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলার অনুমোদন দেয়া হয়।ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সাবেক এসভিপি আজাদ হোসেন তাঁর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করায় গ্রাহক ওই অর্থ আত্মসাতের সুযোগ পেয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়।
মঙ্গলবার তিনজনের বিরুদ্ধে ১৩৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে হালিশহর থানায় মামলা হয়।

মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, ইয়াসির এন্টারপ্রাইজের মালিক মোজাহের হোসেন ২০০১ সালে এবি ব্যাংকের পোর্ট কানেকটিং রোড শাখায় একটি হিসাব খোলেন। তিনি ঋণসুবিধা নিয়ে খাদ্যসামগ্রী বিদেশ থেকে আমদানি ও স্থানীয় বাজার থেকে কিনে বিক্রির ব্যবসা করেছেন। শাখার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এবি ব্যাংকের প্রধান শাখা ওই ব্যবসায়ীর অনুকূলে ঋণ অনুমোদন দেয়। শাখা ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দিন মাত্র ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার ১০ শতক জমি সহায়ক জামানত নিয়ে ঋণ প্রস্তাব প্রদান ও ঋণ বিতরণ করেন। আমদানি করা খাদ্যসামগ্রী গুদামে মজুত ও বিক্রয়ের বিষয়ে যথাযথ তদারকি না করে অতিরিক্ত উৎসাহ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকিং কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ফলে গ্রাহকের জন্য ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্তানুযায়ী, ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশে আমদানি করা মালামালের অর্থ ব্যাংকে জমা না করে গ্রাহক আত্মসাৎ করেছেন।

একুশে/ডেস্ক/এসসি