চট্টগ্রাম : আবদুল্লাহ আল মারুফ। পড়েন চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগে। কিন্তু তিনি ছাত্রলীগ নেতা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের। সর্বশেষ ৬০ জনসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সর্বমোট ২৬১ জনের যে কমিটি ঘোষিত হয় তাতে সহ সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছেন আবদুল্লাহ আল মারুফ। আর এর মধ্যদিয়ে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন ইচ্ছা করলে বহিরাগতরাও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে পদ ‘বাগিয়ে’ নিতে পারেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত বর্ধিত কমিটিতে বহিরাগত এই ছাত্রের নাম দেখে খোদ বিস্মিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু। বিষয়টিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে এটি সুস্থ ছাত্ররাজনীতির পথে অন্তরায় বলেও মনে করেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে একুশেপত্রিকাডটকমকে আলমগীর টিপু বলেন, একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পাওয়া অনাকাক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনা। কমিটির কলেবর বাড়ানোর জন্য সর্বশেষ যে ১০ জনের নাম আমরা কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলাম তাতে বাড়তি ৫০ জনের নাম যুক্ত করে দেওয়া হয় কেন্দ্রের ইচ্ছায়, যার একজন আবদুল্লাহ আল মারুফ। যাদের অনেককে আমরা ভালোভাবে চিনি না, জানি না। এই ধরনের বহিরাগত, অছাত্রের বিষয়ে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেও কোনো লাভ হচ্ছে না বলে জানান আলমগীর টিপু।
শুক্রবার রাতে আবদুল্লাহ আল মারুফের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-২০০৯ সেশনের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র উল্লেখ করে সেই ক্যাটাগরিতে চবি ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পেয়েছেন বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, আমি বলুয়ার দিঘী লামাবাজার স্কুল থেকে এসএসসি, চকবাজারের মেরনসান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। এরপর বাড়তি ডিগ্রি অর্জনের জন্য পোর্ট সিটিতে ভর্তি হয়েছি।
চবিতে সেই পড়ালেখা শেষ হয়েছে কিনা, ছাত্রত্ব বা ভর্তি বহাল আছে কি না জানতে চাইলে তিনি এসব ব্যাপারে কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এমনকি বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইলে সেটিও জানাতে অপারগ বলে জানান। তার উত্থান মেনে নিতে না পারে একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে বলে দাবি করেন তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি মনসুর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে একুশেপত্রিকাডটকমকে তিনি বলেন, অনুসন্ধান করে জেনেছি ২০০৮-২০০৯ সেশনে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে আবদুল্লাহ আল মারুফ নামে একজন ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু ৬ মাসের বেশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন না। বর্তমানে তার ভর্তি কিংবা ছাত্রত্ব কিছুই নেই।
প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অছাত্র, বিবাহিত এবং ২৭ বছরোর্ধ্বরা ছাত্রলীগের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন না। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পাওয়া পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র মারুফ বহিরাগত ছাড়াও ‘বিবাহিত’। এসব কারণে ছাত্রলীগে থাকার নৈতিক অধিকার তিনি হারিয়েছেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।