নারী আসন: চট্টগ্রাম মহানগর কি আবার বঞ্চিত হবে?


চট্টগ্রাম: দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি, আন্দোলন-সংগ্রামে চট্টগ্রাম মহানগরের নেত্রীরা বরাবর এগিয়ে থাকলেও সুসময়ে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তাঁরা ঠিক ততটাই পিছিয়ে পড়ছেন, বঞ্চিত হচ্ছেন।

নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ ও উত্তর জেলা থেকে আওয়ামী লীগের চারজন নেত্রী সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হলেও চট্টগ্রাম মহানগরের কেউ সাংসদ হতে পারেননি।

অথচ বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের রাজপথে অগ্রভাগে, নেতৃত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরের নেত্রীরা; তাদের সাথে যুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলার নেত্রী-কর্মীবৃন্দ।

একাদশ সংসদে রাজনৈতিক দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে সংরক্ষিত আসন বণ্টিত হবে। আওয়ামী লীগের ভাগে পড়েছে ৪৩টি আসন। সেই ৪৩টি আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন ৩ থেকে ৪ জন। এ ক্ষেত্রে আন্দোলন-সংগ্রামের ক্ষেত্র চট্টগ্রাম মহানগরের নেত্রীরা আবার বঞ্চিত হবেন কিনা- সে প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের।

এর আগে নবম সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হন তৎকালীন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা চেমন আরা তৈয়ব। ১৯৯৮ সালের দিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া চেমন আরা তৈয়ব এবারও নারী আসনে মনোনয়ন চেয়েছেন।

পরবর্তীতে নবম সংসদে ৫টি নারী আসন বাড়ানো হলে তাতে জায়গা পান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী হাসিনা মান্নান। তার স্বামী মরহুম ডা. আব্দুল মান্নান চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থেকে দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একদশ সংসদে নারী আসনে আবার মনোনয়ন চেয়েছেন হাসিনা মান্নান।

নবম সংসদে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা থেকে দু’জন মুল্যায়িত হওয়ার পর দশম সংসদেও দক্ষিণ জেলা থেকে ওয়াসিকা আয়েশা খান আওয়ামী লীগ থেকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হন। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য প্রয়াত আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে। এবারও নারী আসনে সাংসদ হতে চান ওয়াসিকা আয়েশা খান।

এদিকে ২০১৪ সালে দশম সংসদে সংরক্ষিত আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবিহা নাহার বেগমও সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। সাবিহা মুসা নামে পরিচিত এ আওয়ামী লীগ নেত্রী একাদশ সংসদে নারী আসনে মনোনয়ন চেয়েছেন।

আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানায়, হাইকমান্ডও অনুধাবন করছে, চট্টগ্রাম মহানগর থেকে একজন তৃণমূল কর্মীকে এমপি করার বিষয়টি; এক্ষেত্রে ত্যাগী, শিক্ষিত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নারীদের বিবেচনায় নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন একুশে পত্রিকাকে বলেন, নারী আসনের প্রার্থীদের নাম প্রস্তাব করে কিছু পাঠাতে কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগকে বলা হয়নি। এ ধরনের কিছু বললে যারা সংগঠক, দক্ষ, দলের জন্য কাজ করেছেন তাদের নাম আমরা পাঠাতে পারতাম।

নারী আসনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের উচ্চ মহল যা চিন্তা করে তাই চূড়ান্ত বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এ নেতা।