জাতীয় জাদুঘর থেকে সরিয়ে নেয়া হলো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক । আজ বুধবার দুপুরে সরকারের পক্ষ থেকে পদকটি সরিয়ে ফেলে কর্তৃপক্ষ। এটি জাদুঘরের গুদাম ঘরে রক্ষিত ছিল। জাতীয় জাদুঘরের দায়িত্বে নিয়োজিত এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, জাদুঘরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালককে নিয়ে সচিবালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই এ বিষয়ে জিয়ার স্বাধীনতা পদকসহ সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া পদকগুলোর মধ্যে স্বাধীনতা পদক দেশের সর্বোচ্চ পদক। যেকোনো ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য এই পদকে ভূষিত করা হয়।
২০০৩ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেয়। একই বছর জিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এই পদকে ভূষিত করা হয়। সে সময় পুরস্কারের মেডেল, সম্মাননাপত্র কোনো উত্তরাধিকারীকে না দিয়ে বাংলাদেশ জাদুঘরের একটি কর্নারে যথাযোগ্য মর্যাদায় সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, এর মধ্যদিয়ে জিয়াকে বঙ্গবন্ধুর সমকক্ষ করার চেষ্টা করা হয়েছে।
জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকে জিয়ার পদক সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো প্রাধান্য দেয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হাইকোর্টের রায়। ঐ রায়ের প্রথমেই বলা হয়েছে, ১৯৭৫-এর নভেম্বর থেকে ১৯৭৯ সালের মার্চ পর্যন্ত সংসদ ছাড়াই বাংলাদেশে সরকার চলেছে। একনায়কতন্ত্র হিসেবে দেশ চালিয়েছে সরকার। যেখানে ছিল না কোনো গণতন্ত্রের ছোঁয়া।
কমিটি সুপ্রিমকোর্টের আপিলেট ডিভিশনের আদেশটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে। সেখানে বলা হয়, ‘সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের শাস্তি পাওয়া উচিত। যেন মানুষ সংবিধান লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ভয় পায়।’ যেহেতু রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা আরোহণকে আপিলেট ডিভিশন অবৈধ ঘোষণা করেছেন, এটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে আমলে নিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি।