:: একুশে প্রতিবেদক ::
রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের মতে, এক-এগারোর সময় কারারূদ্ধ শেখ হাসিনার মামলা পরিচালনায় গঠিত সেলে যে ক’জন আইনজীবী ছিলেন তাদের একজন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। মামলা পরিচালনার সারথী হওয়ার বিনিময়ে শেখ হাসিনা তাকে সংরক্ষিত আসনের এমপি, প্রতিমন্ত্রী এবং সর্বশেষ জাতীয় সংসদের প্রথম নারী স্পিকার নিযুক্ত করেন, যেটি ‘ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স’ অনুযায়ী রাষ্ট্রের তৃতীয় পদ। কেবল শিরিন শারমিন চৌধুরী নন, সেই দুঃসময়ে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যারাই শেখ হাসিনা কিংবা দলের জন্য ন্যূনতম ভূমিকা রেখেছেন প্রত্যেকে নানাভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন, নিযুক্ত হয়েছেন বিভিন্ন পদ-পদবীতে। কেবল বাদ পড়েছেন চট্টগ্রামের রাজপথ কাঁপানো সেই সাহসী নারীকণ্ঠ, অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু।
এক-এগারোর সময় দেশে যখন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর উপর নির্যাতন-নিপীড়ন, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার গভীর ষড়যন্ত্র, অধিকাংশ নেতাকর্মী যখন পলাতক কিংবা নিরুদ্দেশ তখন ৫ শতাধিক নারীকর্মী নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামের মাটিতে প্রথম সমাবেশ করেন রেহানা বেগম রানু।
বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ সেই সমাবেশ প- করে দেয়, আহত হন রানু, যা দেশের প্রায়সব দৈনিকে তখন গুরুত্বের সঙ্গে ছাপা হয়েছিল। এরপর পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতারা শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে জড়ো হয়েছিলেন প্রেসক্লাব অভ্যন্তরে। সামনে পুলিশের যুদ্ধংদেহী অবস্থান। ভয়ে জবুথবু অনেকেই। এই অবস্থায় শেখ হাসিনার মুক্তির দাবি সম্বলিত ব্যানার নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন রানু। তাকে অনুসরণ করে অন্য নেতারা। তখনও একাই পুলিশী হেনস্তা ও লাঞ্ছনার শিকার হন রানু। জরুরি অবস্থায় ২০০৭ সালে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কেউ পলাতক, কেউ কারাগারে, কেউবা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ব্যস্ত, তখনই সমস্ত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চট্টগ্রামে নারীদের নিয়ে ১৫ আগস্টসহ ঘটা করে সমস্ত জাতীয় কর্মসূচি পালন করেছেন এই মানুষটিই।
ক্যান্টনমেন্টের রক্তচক্ষু সামনে, পুলিশের ব্যারিকেড পথে পথে- তবুও জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি-আন্দোলন থেকে চুল পরিমাণ পিছু হটেননি তিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে-ঘাটে সরব ছিলেন প্রিয় নেত্রীর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত। শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে ৪ নারী সহকর্মীসহ স্বেচ্ছায় কারাবরণেরও ঘোষণা দিয়েছিলেন রানু। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, শেখ হাসিনা সরকারের সাড়ে ৭ বছরেও সর্বোচ্চ ত্যাগী এই মানুষটির কোনো মূল্যায়ন হয়নি। বরং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার পর কেন জরুরি অবস্থায় রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা হলো তার জন্য কোনো কোনো মহলের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে, পড়তে হয়েছে রাজনৈতিক রোষানলে।
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সময়ে রেহানা বেগম রানু সংরক্ষিত আসন থেকে এমপি হচ্ছেন- এমন রব উঠে চট্টগ্রামজুড়ে। ব্যাপক আলোচিত হন গণমাধ্যমে। কিন্তু কোনোবারই এমপি হননি তিনি। কেন হননি, হতে পারেননি সে প্রশ্নের জবাব সরাসরি না দিয়ে রানু বলেন, এমপি হওয়ার জন্য যে যোগ্যতা দরকার তা হয়তো আমার নেই। বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শিক, দায়িত্ববানকর্মী হিসেবে আমি অনেক ভালো আছি, স্বাচ্ছন্দ্যে আছি।
অন্য এক প্রসঙ্গে রেহানা বেগম রানু বলেন, ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী অসম্ভব মেধাবী, যোগ্য একজন মানুষ। এমন মেধাবীদের বেছে নেওয়ার ‘চোখ’ শুধু জননেত্রী শেখ হাসিনারই আছে। মন্ত্রীসভাসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবীতে অধিকাংশ মেধাবীদের ঠাঁই দিচ্ছেন তিনি। তাঁরই পথ ধরে এগোচ্ছেন তার যোগ্য সন্তান, আগামীর নতুন বাংলাদেশের কর্ণধার সজিব ওয়াজেদ জয়। তিনি বিশ্বাস করেন এই দেশকে পাল্টে দিতে হলে তরুণ, যোগ্য ও মেধাবী নেতৃত্বের বিকল্প নেই। আর সেই কাজটি তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন অতি সন্তর্পণে। সজিব ওয়াজেদ জয়ের বাছাই করা আগামীর ‘মেধাবী ও তরুণ কাফেলা’ই হবে ১৭ কোটি মানুষের স্বপ্নমঙ্গলের ‘তরী’। – বলেন রানু।
১৯৯৪ সালে সরাসরি চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে রানুর অভিষেক। ক্রমান্বয়ে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। রাজনীতির পাশাপাশি সমাজের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তার পদচারণা নেই। কোথাও বাল্যবিয়ে হচ্ছে; সেই বিয়ে ঠেকাতে একাই লড়েছেন। আবার নগরে জলাশয়-জলাধার ভরাট হচ্ছে; প্রতিবাদের ঝা-া হাতে ছুটে গেছেন। কর্ণফুলির দখল-দূষণ হচ্ছে; সেখানেও হাজির তিনি। কারো সংসার ভেঙেছে; জোড়া লাগানোর ডাকে এগিয়ে যান তিনি। আগুনে-নির্যাতনে দগ্ধ হয়েছে কোনো নারী; আইনী সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। স্লোগানে স্লোগানে রাজপথ মাতানো দরকার; উচ্চকিত আওয়াজটি দিতে হয় তাকে। এভাবে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে জনমানুষের সঙ্গে মিশে আছেন অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু।
সমাজের ‘জেন্ডার বৈষম্য’ নিয়ে তিনিই আওয়াজ তুললেন, ‘নারী’ নয়, ‘মানুষ’ সম্বোধন করতে হবে নারীকে। এই কনসেপ্টে মাঠে নামেন তিনি। শুরু হয় নারীদের সংগঠিত করার কাজ। যেখানে নারীবৈষম্য ও বঞ্চনার ঘটনা সেখানেই তিনি। নারী জাগরণের কাজের পাশাপাশি রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে দেখলেন একজন নারীর অগ্রযাত্রায় সবচেয়ে বড় বাধা তার ‘শারীরিক বৈশিষ্ট্য’। নারীকে ‘ভোগ্যপণ্য’ কিংবা ‘সেবাদাস’ ভাবা মানুষের সংখ্যা তথাকথিত এই এলিট সমাজেও একেবারে কম নয়।
রাজনীতি, সমাজসংস্কার, নারীমুক্তি আন্দোলন কিংবা নারীর প্রতি বৈষম্য ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে মুখোশপরাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি হারে হারে টের পেয়েছেন তিনি। এই জায়গায় ‘কম্প্রোমাইজ’ না করে টিকে থাকা ছিল অনেক বেশি কষ্টকর। আর সেই কষ্টের কাজটি তাকে করতে হয়েছে অনেক বেশি সাহস, ধৈর্য্য ও দৃঢ়তার সঙ্গে।
প্রতিদিন নির্যাতিতদের পদভারে মুখর হয় তার বাসা, চেম্বার। স্বজন-সতীর্থ মানুষটিকে শোনান নানান কষ্টকর বর্ণনা আর নির্যাতনের কথা। এক্ষেত্রে অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানুর ব্যতিক্রম ও বিরল উপমার কথাটি বলা যায়। ভিকটিমের মুখে ঘটনা শোনার সাথে সাথে মামলায় না গিয়ে প্রথমে তিনি দুইপক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেন। অনেকক্ষেত্রে সফলতাও পেয়েছেন তিনি। এভাবে আদালত নয়, রানুর বাসা-চেম্বারে বসে বহু তিক্ততা, জটিলতার অবসান হয়েছে, ঘটেছে নতুন করে ‘হাতে হাত ধরা’র ঘটনা। এ নিয়ে রানুর বিখ্যাত উক্তিÑ ‘মামলা করা নয়, মামলা প্রোটেক্ট করাই আমার লক্ষ্য।’
এরও আগের কথা। চিত্তের তাগাদা, মনের খোরাক মেঠানোর কর্মযজ্ঞে অহর্ণিশ কাটাতে গিয়ে তার সামনে এলো জনপ্রতিনিধি হওয়ার হাতছানি। ২০০০ সালে উত্তর আগ্রাবাদ, পাঠানটুলি ও সরাইপাড়া তিন ওয়ার্ড মিলে বিপুল ভোটে কমিশনার নির্বাচিত হন রেহানা বেগম রানু। সুরের, সুন্দরের, সৃষ্টির এই মানুষটির জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুবাদে আনুষ্ঠানিক অনুপ্রবেশ ঘটে জটিল, কুটিল এক কর্দমাক্ত জগতে। কারণ, জনপ্রতিনিধি মানে ভালো-মন্দ, উগ্র-উচ্ছৃঙ্খল অদ্ভুত সব চরিত্রের মুখোমুখি হওয়া।
অনেকেই ভেবেছিলেন বহুমুখী সমস্যা, বহুমুখী চরিত্রগুলোকে মোকাবিলা করা কঠিন হবে সুর আর গানের এই মানুষটির। বাস্তবে স্বজন-শুভার্থী, সাধারণের এই ধারণা ভুল প্রমাণ করতে বেশি সময় লাগেনি কমিশনার রানুর। দীর্ঘসময় কমিশনার থাকাকালে সমাজের প্রভাবশালী, মাতব্বর শ্রেণীর রক্তচক্ষু, ভয় উপেক্ষা করে বিচারপ্রার্থীদের সঠিক ‘জাজমেন্ট’টি দিতে কখনো তিনি ভুল করেননি। এমনও সময় গেছে একদিনে চৌদ্দটি সালিশবৈঠক নিষ্পত্তি করতে হয়েছে তাকে।
সুষ্ঠু, ন্যায়ভিত্তিক বিচারের স্বার্থে প্রভাব বিস্তার কিংবা প্রভাবিত করতে পারে এমন মাতব্বর-সর্দার শ্রেণীর মানুষকে বিচারকক্ষ থেকে ধমক দিয়ে বের করে দিতেও কুণ্ঠা করতেন না। নেতৃত্বের বলিষ্ঠতা, প্রশাসনিক দক্ষতা, সাহস আর প্রতিবাদী ভূমিকার কারণে রেহানা বেগম রানুকে বিপুল ভোটে পরপর তিনবার (২০০০-২০১৫) ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত করেন এলাকাবাসী।
সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামটিও তাকে করতে হয়েছে। প্রথমবার কমিশনার নির্বাচিত হয়ে দেখেন নারী কাউন্সিলরদের কোনো ‘ক্ষমতা’ নেই। ‘ঢাল নেই, তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার’ তারা। তিন ওয়ার্ডকে সমন্বয় করে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত নারী কাউন্সিলররা একটি জাতীয়তা বা চারিত্রিক সনদ ইস্যু করতে পারেন না। অথচ মাত্র এক ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত পুরুষ কাউন্সিলররা সনদ ইস্যু, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন দিব্যি। এই বৈষম্য দূর করতে প্রথম প্রতিবাদ শুরু করেন তিনি। এ নিয়ে সিটি করপোরেশন এবং রাজনৈতিক অঙ্গনের অভিভাবক, পিতৃতুল্য মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে অনিচ্ছাকৃত বিরোধে জড়াতে হয় সন্তানতুল্য রানুকে। বিষয়টি ওই সময়ে ‘টক অব দ্যা সিটি’তে পরিণত হয়।
সিটি করপোরেশনে ‘ভারপ্রাপ্ত ’মেয়রপ্রথা ভেঙে আইন করে সৃষ্টি করা হয় প্যানেল মেয়র প্রথা। তিন প্যানেল মেয়রের মধ্যে একজন বাধ্যতামূলক নারী প্যানেল মেয়রের বিধান রাখা এবং নির্বাচিত কাউন্সিলরদের গোপন ভোটে প্যানেল মেয়র নির্বাচন করতে দাবি তুলেন রানু। এই দাবিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তৎকালীন উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইকবালের মুখোমুখিও হন তিনি। রানু তখন বাংলাদেশের ছয় সিটি করপোরেশনের নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিক ইনস্টিটিউশন (আইআরআই)-এর উদ্যোগে গঠিত সংগঠনের সভাপতি। ফলে সহজেই উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইকবালের মাধ্যমে প্যানেল মেয়রে একজন নারী প্রতিনিধি রাখা এবং ভোটের মাধ্যমে প্যানেল মেয়র নির্বাচন করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সক্ষম হন তিনি।
চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের পথিকৃৎ বলা হয় রানুকে। বলাবাহুল্য, নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকানোর মধ্যদিয়েই শুরু হয় বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে তার কঠিন শপথ। নিজের গড়া সংগঠন ‘ফাইট ফর উইমেন রাইটস-এর ব্যানারে গত পঁচিশ বছরে হাজার হাজার বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করেছেন তিনি। বাংলাদেশের যে প্রান্তে বাল্যবিয়ের খবর পান সেখানেই ছুটে যান তিনি। এগুলো করতে যেয়ে বহুবার প্রাণনাশের হুমকি এসেছে তার জন্য।
চট্টগ্রামের পরিবেশরক্ষা, দূষণরোধে ঈর্ষন্বীয় কাজটিও রেহানা বেগম রানুর। কোথাও জলাশয়, জলাধার কিংবা পুকুর ভরাটের ঘটনা ঘটলে সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। মানববন্ধন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। নগরীর ভেলুয়ার দিঘি রক্ষার তীব্র প্রতিবাদটিও আসে রানুর সংগঠন থেকে। কর্ণফুলীর দখল-দূষণ রোধে প্রায়শ থাকেন জোরালো ভূমিকায়। কর্ণফুলী সৌন্দর্যবৃদ্ধি ও নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে হাজার হাজার মানুষ নিয়ে কর্ণফুলী পাড়ে মানববন্ধনও করতে হয় তাকে। এসব করেন নিজ সংগঠন জলাশয় ও জলাধার রক্ষা কমিটির ব্যানারে।
৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (ডবলমুরিং) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন রানু। তৃণমূলের ভোটে ৪র্থ হন তিনি। মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচনে ৮ ও ৯ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের মেম্বার ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে মাস্টার্স ও চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু ‘ল’ টেম্পল থেকে এলএলবি করা রেহানা বেগম রানু শিক্ষাক্ষেত্রে এই দুটি শীর্ষ দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষার প্রকৃত উন্নয়নে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেন। তিনবার বেসরকারি কারা পরিদর্শক থাকাকালে কারাগারের সংস্কার, উন্নয়নের পাশাপাশি কারাবন্দীদের শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নে নান্দনিকতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া বিনাদোষে যারা হাজতবাস করছেন কিংবা অভিভাবকহীন কারাবন্দীদের তালিকা করে তাদের জামিনে মুক্তির ব্যবস্থা করেন।
রাজনীতি, সমাজ ও নারী উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় বাংলাদেশস্থ মার্কিন দূতাবাস ২০০৫ সালের দিকে রেহানা বেগম রানুকে ‘আরলি রাইজিং লিডার’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন। একই সঙ্গে এই অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয় সাবেক রাষ্ট্রপতি একিএম এম বদরুদ্দৌজা চৌধুরীর সন্তান, তৎকালীন এমপি মাহী বি. চৌধুরীকে। ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ নামে একটি গ্রন্থেও লেখক তিনি। তার এই গ্রন্থ প্রকাশ করেছে ঢাকার জাগৃতি প্রকাশন। নারীর ক্ষমতায়ন, রাজনীতি ও পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নিতে রেহানা বেগম রানু ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা ও থাইল্যান্ড সফর করেন।