নিজস্ব প্রতিনিধি : পটুয়াখালী-৩ (গলাটিপা-দশমিনা) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়ের করেছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক গলাচিপা মহিলা কলেজের সহযোগী আধ্যাপক মেহেদী মাসুদ।
সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক টেলি কথোপকথনের সূত্র ধরে গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে গলাচিপা থানায় রনিসহ মোট ৬ জনকে অভিযুক্ত করে এ মামলা দায়ের করেন তিনি। তবে সাবেক এমপি রনির দাবি ওই মামলার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
বাকি আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শাহজাহান খান, রনির ভাই সরোয়ার হোসেন, শ্যালক মকবুল হোসেন, চিকনিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শিপলু খান ও শাহ আলম সানু।
গলাচিপা থানার ওসি আখতার মোর্শেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গোলাম মাওলা রনিসহ মোট ৬ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। তবে কাউকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।
রনির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে গলাচিপা টিঅ্যান্ডটি সড়কে গোলাম মাওলা রনির স্ত্রীসহ তার পরিবারের সদস্যরা আত্মঘাতী ঘটনা ঘটিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি করে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। মোবাইলে তার কথোপকথন ফেইসবুকে ভাইরাল হলে জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়, যা আসন্ন নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
এ বিষয়ে গোলাম মাওলা রনি বলেন, হাই কোর্টের নির্দেশনা আছে যে ক্ষতিগ্রস্তরা ছাড়া একই ঘটনায় অন্য কোনো পক্ষ মামলা করতে পারবে না। এখানে আমার স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে ঘটনায় আমার স্ত্রীর অভিযোগ থানা পুলিশ গ্রহণ না করে আইন লংঘন করেছে। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে একটি সাজানো মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যারিস্টার মইনুল হকের যে রায় হয়েছে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ মামলা করতে পারবে না। আমার কথার দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই। আমি যে কথা বলেছি তার সঙ্গে ডিজিটাল আইনের কোনো যোগসূত্র নেই। এখানে মামলার প্রেক্ষাপট ভুয়া। এখন কেউ যদি রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে কাউকে হয়রানি করতে চায় সেটি তার ব্যক্তিগত বিষয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ ডিসেম্বর গলাচিপা সদরে তার স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনুর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
ওই হামলার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে রনি সেদিন সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারীরা তার স্ত্রী ও বোনের গয়নাও লুট করেছে।
তার দুদিন পর ইউটিউব ও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি অডিও টেপের ভিত্তিতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ওই টেলি কথোপকথন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান খানের সঙ্গে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির।
সময় টেলিভিশন যে অডিও টেপটি তাদের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করেছে, সেখানে একজনকে বলতে শোনা যায়, গাড়িটা আগে থানায় নাও। থানায় নিয়া এই সুযোগে প্রার্থীসহ সবাইরে মামলায় দিয়ে দাও। আমি ওপরে প্রেসার ক্রিয়েট করতেছি। তোমরা সমস্ত নেতারা থানা ঘেরাও করো, সবাই, এভরিবডি, সমস্ত নেতাকর্মী।
“ওখানে বসে তোমার ভাবিকে বাদী কর। তার ওপর হামলা হয়েছে, তার গাড়ির ওপর হামলা হয়েছে বলে সবাইরে মামলা কর…. । মামলা না নেওয়া পর্যন্ত তোমরা থানা থেকে নামবা না সবাই। এটা কিন্তু আমাদের সুযোগ এবং সব জায়গায় টেলিফোন দিয়ে হাজার হাজার লোক থানা ঘেরাও কর।…. এটা আমাদের একটা সুযোগ আসছে, ঠিক আছে?”
আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে নাম লেখানো রনির এবার গলাচিপা-দশমিনা আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
একুশে/এসসি