বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার পদক কেড়ে নেয়ার উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন।
তিনি আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেছেন,‘এ ধরনের উদ্যোগ মুক্তিযুদ্ধ,মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়।কারণ জিয়াউর রহমানকে ছোট করলে আপনার (প্রধানমন্ত্রী)পিতাকে ছোট করা হবে।কারণ জিয়াউর রহমান আপনার বাবার নামে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।এই একটি কারণেই তো আপনি জিয়াউর রহমানকে সবার উর্ধ্বে স্থান দিতে পারেন।’
এই প্রথম বিএনপির কোনো নেতা বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতা ঘোষণার কথা স্বীকার করলেন।এর আগে বিএনপি নেতারা বলে আসছিলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী গণদল আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় দুদু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার পদক প্রত্যাহার করে নেয়ার এবং জিয়াউর রহমানের কবর স্থানান্তরের উদ্যোগকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে উপহাস হিসেবে মন্তব্য করে বলেন,‘শেখ হাসিনা স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ৪৪ মাসের মধ্যে এসব সিদ্ধান্ত বাতিল করা হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন,এক সাগর রক্তের বিনিমিয়ে যে দেশ স্বাধীন হয়েছে সেই দেশে নির্বাচিত সরকার নেই-এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক।কিন্তু ইতিহাস বলে কোনো ফ্যাসিবাদী সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। বাংলাদেশেও পারবে না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন,‘আপনাকে যারা এখন রামপালের বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন তারা আপনার বাবাকে বাকশাল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।তাই জিদ না করে আসুন ভিন্ন চিন্তার রাজনীতি করলেও জাতীয় এই ইস্যুতে ঐকমত হই।’
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আর তার (জিয়াউর রহমান)মাজারের কারণে সংসদ ভবন উজ্জলতম প্রতীক হিসেবে পরিণত হয়েছে। কোনো বিদেশি আসলে তারা সারা বাংলাদেশ ঘুরে দেখতে না পারলেও সংসদের আশপাশে ঘুরলে তারা জিয়াউর রহমানের কবর দেখতে পারবেন। তারা জানবেন তিনি বাংলাদেশের এমন একজন রাষ্ট্রপতি ছিলেন যার মৃত্যুর পর কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল না,গাড়ি ছিল না।যিনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
বিএনপি নেতা বলেছেন,‘জঙ্গি ইস্যুতে ধরে ধরে পথে-ঘাটে মানুষ হত্যা করছে সরকার।সাম্প্রতি জঙ্গি বিরোধী অভিযানের বেশ কয়েক কিছু জঙ্গিকে হত্যা করার পর আজ সোমবার এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন।
গত পহেলা জুলাই রাজধানীর হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ১৭ বিদেশিসহ ২২ জন খুন হওয়ার পর সরকার রাজধানীর কল্যাণপুর, নরায়ণগঞ্জে জ ঙ্গি আস্তানায় হানা দিয়ে বেশ কিছু জ ঙ্গিকে হত্যা করার পর সারা দেশে একটা স্বস্তি নেমে এলেও বিএনপি নেতা জঙ্গিদের হত্যার বিরোধীতা করে বক্তব্য দিচ্ছেন।
রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরোধীতা করে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বিদ্যুতের বিরোধীতা করেননি। তিনি বলেছেন, এখানে এই প্রকল্প হলে কি ক্ষতি হবে সেই ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তার বক্তব্যকে উপস্থাপন করেছেন তা ন্যাক্কারজনক।রামপাল এখন জনগণের বিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। দেশের ৯৫ভাগ মানুষ রামপালের বিরুদ্ধে’
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।