মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

তৃণমূল থেকে আসা আ.লীগ নেতার মাথায় বহিষ্কার-খড়গ!

প্রকাশিতঃ ৪ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৭:৩১ অপরাহ্ন

রাকীব হামিদঃ স্কুলজীবন থেকে ছাত্রলীগে হাতেখড়ি । ১৯৭৮ সালে নাজিরহাট কলেজ ছাত্রলীগের ভিপি। এখান থেকেই বিএ পাস। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। ছাত্র রাজনীতির উজ্জ্বল, দেদীপ্যমান উত্থান মূলত এখানেই। ছাত্রলীগের সুলতান মনসুর- আবদুর রহমান কমিটিতে গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণালী, মেধাবী উত্থানের পথ ধরেই। ১৯৯০ সালে নেত্রীর নির্দেশে ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে নিজেকে আবির্ভূত করেন। বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন উপজেলা চেয়ারম্যান। ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে আসীনে নেত্রীর আশ্বাসের পরেও নির্বাচিত হয়েই দলের পদ ছাড়েন।

সেই থেকে এখনো তিনি দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, নেত্রীর বিশ্বস্থ সিপাহশালার। জীবনে অনেক কিছু করার সুযোগ থাকলেও, দলের জন্যেই ত্যাগ করেছিলেব সব। রাজনীতিকেই করেছেন ধ্যান-জ্ঞান। সেই ধ্যানের আওয়ামী রাজনীতির পরীক্ষিত এই কর্মীর মাথায় এখন আওয়ামী লীগেরই আজীবন বহিষ্কারের খড়গ। বলছিলাম এককালের তুখোড় ছাত্রনেতা এটিএম পেয়ারুল ইসলামের কথা।

হ্যাঁ, সত্যি তার মাথায় এখন বহিষ্কারের খড়গ। কারণ তিনি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে  স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এখনো মাঠে রয়েছেন। এর আগে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করলেও অন্তর্কোন্দলে যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর কাছে অল্প ব্যবধানে পরাজিত হন।

বরাবরের মতো দলের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় তার নাম থাকলেও, শেষপর্যন্ত এই আসনে নৌকার টিকেট পান তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। আগামী ৮ ডিসেম্বর প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করলে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ফটিকছড়িতে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- এটি প্রায় নিশ্চিত।

এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এটিএম পেয়ারুল একুশে পত্রিকাকে জানালেন, কেন তিনি প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সাংসদ যাকে এবারো নৌকার টিকেট দেয়া হয়েছে তিনি জনবিচ্ছিন্ন। গত পাঁচবছরে এলাকার জনগণ তার চেহারা দেখেনি। এ কারণে দলমত নির্বিশেষে তার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে আমাকে নির্বাচন করতে অনুরোধ জানায় এবং এই লক্ষ্যে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের কাছে আমাকে নিয়ে তাদের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে। সার্বিক বিবেচনায় তারা ধরেই নিয়েছিল সুখে দুঃখে যাকে পায়, তাকেই এবার তারা সংসদে পাঠাবে।

সঙ্গতকারণে জনগণ যখন আশাহত তখন আমাকেই চেপে ধরলো। বললো, আপনাকে নির্বাচন করতে হবে। আমি যেহেতু জনগণের রাজনীতি করি, সেহেতু তাদের সেন্টিমেন্ট আমাকে বুঝতে হবে, মূল্য দিতে হবে তাদের ভালোবাসার।

বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনি এখন আজীবন বহিষ্কারের ঝুঁকিতে-এ প্রসঙ্গে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম জানান, জনগণের ভালোবাসা, দলীয় সিদ্ধান্ত দুটোই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা নেত্রী অবগত আছেন। আশা করি জনগণের নেত্রী, জনমতকেই প্রাধান্য দিবেন। নেত্রীর নির্দেশ শিরোধার্য ভেবে আমার রাজনীতি।

একুশে/আরএইচ/এটি