‘বাংলাদেশের অর্থনীতির ভবিষ্যত উজ্জ্বল’- এমন মন্তব্য করে বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ (চীফ ইকোনোমিস্ট) কৌশিক বসু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, অব্যাহত ৬ শতাংশের অধিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বে বিরল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ তাঁর কার্যালয়ে বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কৌশিক বসু বলেন, বিগত ৫ থেকে ৬ বছরে বাংলাদেশ ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে, যা বিশ্বে বিরল। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি নীতি প্রণয়ন করেছে এবং এর আওতায় বিভিন্ন লক্ষ্য নির্ধারিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বেসরকারি খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, পল্লীর মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন খুবই জরুরি এবং এজন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট শিল্প স্থাপনেও উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি কৃষি গবেষণায় বাংলাদেশের অগ্রগতির উল্লেখ করে বলেন, এ খাতে স্থানীয় বিজ্ঞানীরা খুব ভাল সাফল্য অর্জন করেছেন। তাদের নতুন উদ্ভাবন বর্ধিত খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা এবং উৎপাদন আরো বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ড. মশিউর রহমান, মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, ইআরডি’র সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গভর্নর তথাগত রায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রেস সচিব বলেন, গভর্নর ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিস চালুর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তথাগত রায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে তাঁকে ধন্যবাদ জানান।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে নিহত ভারতীয় সৈনিকদের স্মরণে কুষ্টিয়ায় নির্মিত একটি স্মৃতি সৌধ উদ্বোধনের জন্য বাংলাদেশ সফররত ত্রিপুরা রাজ্যের গভর্নর বলেন, এটা ভুল যে তারা ইতিহাস বিমুখ জাতি।
তথাগত রায় বলেন, ত্রিপুরা তার পালাতোনা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানি করতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, দুই দেশ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে সক্ষম হবে। কারণ, ভারত বাংলাদেশের পানির অধিকার অস্বীকার করেনি।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরা সরকার ও জনগণের ভূমিকা ও সমর্থনের কথা স্মরণ করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ভুল পথে পরিচালিত হয়েছে এবং সে সময়কার শাসকরা বিকৃত ইতিহাস প্রণয়নের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মানুষকে প্রকৃত ইতিহাস জানার সুযোগ করে দিয়েছে। নতুন প্রজন্ম দেশের প্রকৃত ইতিহাস জানতে খুবই কৌতূহলী।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে জোরদার এবং আঞ্চলিক যোগাযোগের দ্বার উন্মোচন করবে।
প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরার গভর্নরকে জানান যে, তাঁর সরকার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং কুষ্টিয়ায় এর একটি ফ্যাকাল্টি থাকবে। বাসস।