বিএনপির ৫ নেতার আবেদন খারিজ

ঢাকা : দুর্নীতির অভিযোগে প্রাপ্ত দণ্ড স্থগিত চেয়ে করা বিএনপির ৫ নেতার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) এ আদেশ দেন বিচারপতি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ ।

বিএনপি নেতা আমান উলাহ আমান, ডাক্তার এজেডএম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, মোহাম্মদ মশিউর রহমান ও মোহাম্মদ আব্দুল ওহাবের পক্ষে দণ্ড ও সাজা বাতিলের ওই আবেদন করা হয়েছিল।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, সংবিধান অনুযায়ী কারও দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেই দণ্ড বা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ওই রায় বাতিল বা স্থগিত করে তাকে জামিন দেয়।

হাইকোর্টের এই আদেশের ফলে দুই দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেয়ার পথও আটকে গেল।
আমান উল্লা আমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম। ডা.এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আহসানুল করীম ও খায়রুল আলম চৌধুরী ।

ওয়াদুদ ভুঁইয়া ও আব্দুল ওহাবের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক, ও ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলাম। মশিউর রহমানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক।

দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদআলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

পরে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আপিলের পর জামিন নিয়ে জরিমানা স্থগিত হলেও কারাদণ্ড স্থগিত হয়নি। তাই সাজা সাসপেন্ড চেয়ে আবেদন করেছেন তারা। ৫টি আবেদনের ওপর সোমবার শুনানি শেষ হয়।

আদালত সুত্রে জানা যায়, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, তথ্য গোপন ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৬ কোটি ৩৬ লাখ ২৯ হাজার ৩৫৪ টাকার সম্পদ অর্জন করায় ওয়াদুদ ভুঁইয়াকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ মোট ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেয়।
এ বিষয়ে আপিল করে ২০০৯ সালের ২৮ এপ্রিল ২০০৯ সালে জামিন লাভ করেন তিনি ।

এছাড়া জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৯৩ লাখ ৩৬৯ টাকার সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপন করে মোহাম্মদ আবদুল ওহাবকে গত বছরের ৩০ অক্টোবর ৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ত্রিশ হাজার টাকার জরিমানা দেন যশোর স্পেশাল জজ । এ বিষয়ে আপিল করেন ৬ ডিসেম্বর জামিন নেন তিনি।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত প্রায় ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার তিনশ টাকার অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর ঝিনাইদহ-২ (সদর ও হরিণাকুন্ডু) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমানকে পৃথক ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত।সেইসঙ্গে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে আপিল করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন তিনি।

২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর মামলাটি দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোশরাফ হোসেন মৃধা।

দুর্নীতির মামলায় আমান উল্লাহ আমানকে ২০০৭ সালের ২১ জুন ১৩ বছরের সাজ দেয় বিচারিক আদালত। পরে আপিল করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন তিনি।

একুশে/আরসি/এসসি