মায়ানমারে রোহিঙ্গা সম্প্রদায় সম্পর্কিত একটি কমিশন গঠন করবে দেশটির সরকার, যার প্রধান হবেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। এই কমিশন মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রতি সহিংসতা ও তাদের ঘিরে দেশটিতে যে সংকট রয়েছে তার সমাধান খোঁজার জন্য কাজ করবে। তবে, নতুন এই কমিশন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ মায়ানমারের মধ্যে চলমান সংকট নিয়েও কাজ করবে কিনা সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।
জাতিসংঘের ভাষায়, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষজন বিশ্বের সবচাইতে নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর একটি। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বাস, যারা পৃথিবীর কোন দেশের নাগরিক নয়। দেশটি রোহিঙ্গাদেরকে তার নাগরিক মনে করে না। বরং মায়ানমার মনে করে, তাদের আদি আবাস বাংলাদেশ। এমনকি রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহারেও দেশটির সরকারের আপত্তি রয়েছে।
দেশটির গনতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সাং সুচী বহুদিন যাবত রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোন মন্তব্য করেননি। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এই নেত্রী রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে কথা বলবেন সেটা অনেকেরই প্রত্যাশা ছিলো। এখন এই কমিশন গঠন তার ভূমিকা পরিবর্তনের ইংগিত দেয়।
এতদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের প্রতি অং সাং সুচীর নীতি ছিলো সমস্যার মোকাবেলা নয়, বরং তা রাখাইন প্রদেশেই সীমাবদ্ধ রাখা। একটি কমিশন গঠনের এই সিদ্ধান্ত অনেককেই অবাক করেছে বলে তিনি জানান। কফি আনানকে এর প্রধান করার ইংগিত হলো অং সাং সুচী সম্ভবত রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে নতুন চীন্তা ধারার কথা অন্তত শুনতে রাজি হয়েছেন।
রোহিঙ্গারা মায়ানমারে বৌদ্ধদের হাতে নির্যাতনের শিকার বলে অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সহিংসতার মুখে পালিয়ে সীমান্তপার হয়ে তাদের অনেকেই বাংলাদেশেও প্রবেশ করেছে।
বাংলাদেশে কক্সবাজার এলাকাতেই তাদের একটা বড় অংশ বাস করেন। এছাড়া চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়িতেও কিছু রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। সরকারের রেজিস্টার্ড ক্যাম্পগুলোতে ৩৩ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বাস করে। কিন্তু বলা হয় বাংলাদেশে তাদের মোট সংখ্যা পাঁচ লাখের মতো। বাংলাদেশে তাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি নেই এবং পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার প্রসঙ্গটি বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে বহুদিন যাবত একটি ইস্যু হয়ে রয়েছে। সূত্র: বিবিসি