ইতালির পার্বত্য অঞ্চলে বুধবারের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৬০ জনে গিয়ে পৌছেছে। শত-শত মানুষ ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন। দেশটির মধ্যাঞ্চলের আমব্রিয়া, লাৎজিও এবং মার্কে প্রদেশে রাতভর জীবিতদের খোঁজে কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পটি যে অঞ্চলে আঘাত হেনেছে সেটি রাজধানী রোম থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি পার্বত্য অঞ্চল। আক্রান্ত এলাকার শুধু একটি শহরেই অন্তত ৮৬ জন নিহত হয়েছেন। ঐতিহাসিক আমাত্রিচে শহরের মেয়র বলেছেন, ভূমিকম্পে শহরটির তিন-চতুর্থাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে।
এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারী কাজে সহায়তা করার জন্য ইতালির সেনাবাহিনীকেও সেখানে নিয়োগ করা হয়েছে। রাতভর উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে উদ্ধারকর্মীরা।
‘যে মাত্রার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা ভয়াবহ। শহরের কিছু অংশ মাটির সাথে প্রায় মিশে গেছে। এই অবস্থার মধ্যে আমরা রাতের খাবার তৈরি করার জন্য কিছু রান্নার ব্যবস্থা করছি। সেটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে আগামীকাল আমরা খাবার তৈরি করব। দিনভর সবচেয়ে বড় সমস্যাটি ছিল ট্রাক এবং অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলোতে নিয়ে যাওয়া।’ গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে আমাত্রিচে থেকে ইতালির রেড ক্রসের মুখপাত্র টমাসো ডেলা লংগা সেখানকার পরিস্থিতি বর্ণনা করেন।
এরআগে ঐ এলাকা পরিদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী মাটিও রেনজি সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন যে, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। ভূমিকম্পের পরপরই রাতেরবেলা সেখানে উপস্থিত হয়ে খালি হাতে জীবিতদের উদ্ধার করার জন্য তিনি স্বেচ্ছাসেবক এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের প্রতিও তিনি সম্মান জানান।
ভূমিকম্পের ফলে প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া আরেকটি শহর আক্কুমোলির মেয়র স্টেফানো পেত্রুচ্চিস লেন, তিনি আর জীবিত কাউকে উদ্ধারের আশা করছেন না। এখন তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আক্রান্ত মানুষদের জন্য রাত কাটানোর সুব্যবস্থা করা।
মধ্য ইতালিতে ক্ষয়ক্ষতি হলেও পুরো ইতালিজুড়েই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। দিনভর আরো কিছু ভূকম্পন অনুভূত হয় ঐ এলাকায়। সাম্প্রতিক সময়ে ইটালিতে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল ২০০৯ সালে, যাতে তিন শতাধিক মানুষ মারা যায়। এছাড়াও ২০১২ সালে নয় দিনের ব্যবধানে দুটি ভূমিকম্পে ২০ জনের বেশি নিহত হয়। সূত্র: বিবিসি