সিএনজি চালকের অস্বাভাবিক ড্রাইভিং, লাফ দিয়ে মারা গেলো ভীতসন্ত্রস্থ ছাত্রী!

চট্টগ্রাম : চালকের অস্বাভাবিক ড্রাইভিংয়ে ভয় পেয়ে সিএনজি থেকে লাফ দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তহুরা বিনতে প্রিয়া শরীফ (২৪)। ৩৬ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা গেলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার দিনগত রাত তিনটার দিকে নগরের বেসরকারি মেডিকেল সিএসসিআরে তিনি মারা যান। এর আগে বুধবার বিকেলে সিএনজি যোগে আগ্রাবাদ যাওয়ার পথে সিএনজি চালকের অস্বাভাবিক ড্রাইভিং এবং সন্দেহজনক আচরণে ভীতসন্ত্রস্থ প্রিয়া শরীফ সিএনজি থেকে ফ্লাইওভারে লাফিয়ে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা গুরুতর আহত প্রিয়া শরীফকে সিএসসিআর হাসপাতালে ভর্তির পর শুক্রবার ভোরে তিনি মারা যান।

তহুরা বিনতে প্রিয়া শরীফ ইসলামি ইউনিভার্সটি অব চট্টগ্রাম (আইইউসি) এর ইংরেজী সাহিত্যের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তার বাবার নাম মোহাম্মদ শরীফ। তার বাড়ি নগরের আতুরার ডিপো হাজী পাড়া এলাকায়।

প্রিয়ার সহপাঠী সূত্র জানায়, তহুরা বিনতে প্রিয়া শরীফের সঙ্গে ঢাকায় চাকরিরত মাহফুজ নামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রিয়ার পরিবারের লোকজনও জানত এই সম্পর্কের কথা। যুবকটির সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ের কথাও হচ্ছিল প্রিয়ার।

জানা যায়, বুধবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসে মাহফুজ। সেদিনই বিকেলে মাহফুজের সঙ্গে প্রিয়ার দেখা করার কথা। মাহফুজের সঙ্গে দেখা করতে সিএনজি যোগে বহদ্দারহাট থেকে আগ্রাবাদ যাচ্ছিলেন প্রিয়া। সিএনজিতে উঠেই চালকের বেসামাল ড্রাইভিং দেখে ভয় পেয়ে যান তিনি। একপর্যায়ে এককিলোমিটার-বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের মাঝামাঝি অংশে সিএনজি থেকে লাফিয়ে পড়েন প্রিয়া।

এরপর তাকে সিএসসিআর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৩৬ ঘণ্টারও বেশি চিকিৎসাধীন থাকার পর মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাতজনিত কারণে মারা যান প্রিয়া।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএমপির একজন পুলিশ কর্মকর্তা একুশে পত্রিকাকে দুর্ঘটনার এমনই কারণ বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মেয়েটি সম্ভবত ‘ফোবিয়া’ নামক একধরনের মানসিক রোগে ভুগছিলেন। চালকের অসংলগ্ন ড্রাইভিংয়ে তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। সে কারণে আগপিছ না ভেবে সিএনজি থেকে আকস্মিক লাফ দিয়ে ফ্লাইওভারে ছিটকে পড়েন।

সিএসসিআরের জরুরি বিভাগের কর্মী সুমতি তঞ্চঙ্গ্যা একুশে পত্রিকাকে বলেন, নিউরো সার্জন ডা. কামাল উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে প্রিয়া শরীফকে বুধবার সন্ধ্যায় আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে মস্তিষ্কের আঘাতজনিত রোগের ট্রিটমেন্ট চলাকালে আজ ভোর তিনটায় তিনি মারা যান। তার স্বজনেরা সকাল ৭টার দিকে লাশ গ্রহণ করেন।

একুশে/এটি