সুমন চৌধুরী : সন্তান জন্ম দিতে না পেরে সিংহ নভ’র ঘরে মানসিক কষ্টে দিন কাটছে সিংহী নোভার। দু’বছর পার হলেও এখনো পর্যন্ত গর্ভধারণ করতে পারেনি নোভা। রংপুর চিড়িয়াখানা থেকে সিংহ বাদশাকে আনা হয়েছিল। ওই সময় নোভার সঙ্গে মিল রেখে সিংহ বাদশার নাম রাখা হয় নভ।
জানা গেছে, নভর আয়ুষ্কাল শেষের দিকে। এরই মধ্যে সামনের দুটি দাঁত পড়ে গেছে। তাছাড়া ‘ইন্ডিয়ান লায়ন’ প্রজাতির সিংহ-সিংহী গড়ে ১৫ থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত বাঁচে। সে হিসেবে নভর স্বাভাবিক চাঞ্চল্য কমে যাওয়ার পাশাপাশি তার প্রজণন ক্ষমতাও লোপ পেয়েছে।
এ সিংহ দম্পতিকে মহা ধুমধামের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়। দু’জনের মধ্যে ভাববিনিময় শেষে সিংহ দম্পতির বাসর নিয়েও ছিল ব্যাপক প্রস্তুতি। কিন্তু সিংহী নোভার আশা অর্পূণই থেকে গেল।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কিউরেটর ডা. মো. শাহাদাত হোসেন শুভ একুশে পত্রিকাকে বলেন, বয়সের কারণে গর্ভধারন করতে পারছে না নোভা। ন্যাচারালি যদি না হয় তাহলে আর হবে না।
চট্টগ্রামের সিংহী নোভার জন্য প্রাণী-বিনিময়ের মাধ্যমে রংপুরের নভকে (বাদশা) এবং তার ভাই রাজার জন্য রংপুর চিড়িয়াখানায় নেয়া হয় নোভার বোন বর্ষাকে। দুই চিড়িয়াখানায় দুটি করে সমলিঙ্গের প্রাণী থাকায় একাকিত্ব ঘোচাতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব রুহুল আমীন একুশে পত্রিকাকে বলেন, বংশবিস্তারের ক্ষেত্রে বয়সেরও ব্যাপার আছে। এছাড়া তার ব্লিডিংও হচ্ছে না। তারপরও গর্ভধারণের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের মাস্টার প্ল্যান রয়েছে। আমরা চিড়িখানার পাহাড়গুলোর নাম্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করব। চিড়িয়াখানায় ক্যাঙারু আনা হবে। এরপর আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এক জোড়া সিংহ আমদানির জন্য জেলা প্রশাসসক বরাবরে প্রস্তাব করব।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ১৬ জুন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দুটি সিংহ শাবকের জন্ম হয়। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ মেয়ে শাবক দুটির নাম রাখে ‘নোভা’ ও ‘বর্ষা’। শাবক দুটি জন্মের কিছুদিন পর তাদের মা ‘লক্ষ্মী’ মারা যায়। তিন বছর পর তাদের বাবা ‘রাজ’ও মারা যায়। তখন থেকে নতুন কোনো সিংহ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়নি।
একুশে/এসএইচ/এটি
ছবি : আকমাল হোসেন