টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, ‘দেশ ও জাতির নিরাপত্তার স্বার্থেই’ অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, ফেইসবুক মেসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করা হয়েছে।
তবে ইন্টারনেট বন্ধ করার কোনো নির্দেশনা ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, “অ্যাপগুলো বন্ধ করার সময় এ সমস্যা হতে পারে।”
যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড রিভিউয়ের আবেদন খারিজের দুই ঘণ্টা পর বুধবার দুপুরে বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়।
তার আগে ফেইসবুকসহ ইন্টারনেটে যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাপ বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিমন্ত্রী বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “দেশ ও জাতির নিরাপত্তার স্বার্থেই এগুলো বন্ধ করা হয়েছে।”
ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে জঙ্গিরা কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আগেই বলা হচ্ছিল। তা নিয়ন্ত্রণে ইন্টারনেটে কড়াকড়ি আরোপের কথাও সম্প্রতি বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বেলা সোয়া ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কেউ কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারেননি।
এরপর ইন্টারনেট সংযোগ ফিরতে শুরু করলেও সামাজিক যোগাযোগের কিছু ওয়েবসাইট ও অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ রয়েছে।
তারানা বলেন, ফেইসবুক, ফেইসবুক মেসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধের পাশপাশি অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যান্য অ্যাপ- যেমন ট্যাংগো, আইএমও, টুইটারসহ অন্যগুলোও নজরদারিতে রয়েছে।
‘জাতির বৃহত্তর স্বার্থে’ গ্রাহকদের এই কষ্ট মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বন্ধ হওয়া অ্যাপগুলো চালু হতে পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।”
ইতিহাসে প্রথমবারের ‘মতো’ বুধবার প্রায় দেড় ঘণ্টা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল বাংলাদেশ।
এর আগে চলতি বছরের শুরুতে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধের সময় ‘ভাইবার’ ও ‘হোয়াটসঅ্যাপসহ ইন্টারনেটে যোগাযোগের কয়েকটি মাল্টিমিডিয়া অ্যাপ কয়েক দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
তখন পুলিশ বলেছিল, নাশকতাকারীরা মোবাইল ফোনে কথা না বলে ইন্টারনেটভিত্তিক এসব অ্যাপ ব্যবহার করায় তাদের ধরতে সমস্যা হচ্ছে।
সম্প্রতি দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা ও পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলার ঘটনার পর গত ৮ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে জঙ্গিরা কার্যক্রম চালাচ্ছে।
জঙ্গিদের যোগাযোগ ও অর্থায়ন বন্ধে তাদের শনাক্ত করতে কিছু ‘অ্যাপ’ বন্ধ করাসহ ইন্টারনেটের উপর ‘সাময়িক কড়াকড়ি’ আরোপের ইঙ্গিত দেন তিনি ওই সংবাদ সম্মেলনে। পরে এক অনুষ্ঠানে আবারও তিনি একই কথা বলেন।