ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের নভেম্বরে। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট মনোনিত প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি কিলন্টনের ইতিমধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনী প্রচারণা বেশ জোরেশোরেই চলছে তাদের।প্রচারণা চালাতে গিয়ে বিভিন্ন সময় একে অপরকে লক্ষ্য করে কথার তীর ছুঁড়ছেন তাদের বক্তৃতায়। দমছেন না কিছুতেই। দু’দিন আগেই হিলারি ক্লিন্টনকে তিনি বলেছিলেন, ‘শয়তান।’ এ বার এক ধাপ এগিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বললেন, ‘হিলারি আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা।’
বুধবার ফ্লোরিডার ডেটোনা বিচের এক সভায় ফের ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারিকে আক্রমণের নিশানা করেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘আইএসের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে হিলারির ওই জঙ্গি গোষ্ঠীর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া উচিত।’ লিবিয়া থেকে শুরু করে পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন সঙ্কটের জন্য তিনি সরাসরি দায়ী করেন হিলারিকে।
ট্রাম্পের যুক্তি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রথম দফায় পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে ওই সময়ে দায়িত্বে ছিলেন হিলারিই। আর নিউইয়র্কের ধনকুবের প্রার্থীর মতে, ওই সব এলাকায় সঙ্কটের হাত ধরেই তো আইএসের গোড়াপত্তন।
এর সঙ্গেই ট্রাম্প সভায় পর পর উদাহরণ দিয়ে বলে যান, ‘অরল্যান্ডোর কথা ভাবুন। সান বার্নার্দিনোর কথা ভাবুন। একটু পিছিয়ে গিয়ে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কথা ভাবুন। সারা বিশ্ব জুড়ে কী ঘটছে ভাবুন, আমরাই আইএসকে এই জায়গায় পৌঁছতে দিয়েছি।’
ট্রাম্প বলেন, সেই সময় তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে ৯/১১ আটকানো যেত। তার কথায়, ‘যারা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস করেছিল, ট্রাম্পের নীতির জেরে তারা এখানে ধ্বংসলীলা চালানোর জন্য ঢুকতেই পেত না।’
শুধু ‘শয়তান’ নয়, কয়েক মাস ধরে হিলারিকে ‘কুটিল’ বলেও চলেছেন ট্রাম্প। এ দিন সেই সম্বোধন ফের করে ট্রাম্পের মন্তব্য, ‘কুটিল হিলারি ক্লিন্টনের কাছে হেরে যাওয়াটা কি যথেষ্ট লজ্জাজনক নয়? সেটা ভয়ঙ্কর হবে।’
ট্রাম্প যখন হিলারিকে এ ভাবে আক্রমণ করছেন, তখন ট্রাম্পের প্রার্থীর নাম জড়িয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে অন্য একটি বিষয়ে। আটলান্টিক সিটিতে ট্রাম্পের ক্যাসিনো সাম্রাজ্যের অন্যতম ‘ট্রাম্প তাজমহল ক্যাসিনো’ কর্মীদের ধর্মঘটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যার জেরে কাজ হারাবেন অন্তত তিন হাজার মানুষ। গোটা আটলান্টিক সিটিতে তাজমহল ক্যাসিনোতেই সব চেয়ে কম বেতন দেয়া হতো।
যদিও রিপাবলিকান প্রার্থী এই ক্যাসিনোর সঙ্গে এখন আর জড়িত নন। কিন্তু তার নামটি এই ক্যাসিনোর সঙ্গে প্রায় সমার্থক। ২০১৪ সালেই এই আটলান্টিক সিটিতে আরও চারটি ক্যাসিনো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন আট হাজার মানুষ।
বস্তুত একটি মার্কিন পত্রিকার দাবি, এখন ট্রাম্প ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে হাত ধুয়ে ফেললেও এই ব্যবসায় কর্মী বিক্ষোভের শুরু ট্রাম্পের জমানাতেই। একের এক ক্যাসিনো নিয়ে দেউলিয়া হতে হয়েছিল ট্রাম্পকে। গত মাসে নিউ জার্সিতে হিলারি এই নিয়েই সরব হয়েছিলেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেছিলেন, ‘ট্রাম্পের অর্থনীতির রসায়ন স্বল্প বেতন, অল্প কাজ আর বেশি ঋণ নিয়ে তৈরি। যেভাবে উনি নিজের সংস্থাগুলি দেউলিয়া করেছেন, গোটা আমেরিকাকেও এক দিন দেউলিয়া করবেন।’ সূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।