.ওমর ফারুক হিমেল, দক্ষিণ কোরিয়া : পায়ে হেঁটে একশটি দেশ ঘুরে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশি কন্যা নাজমুন নাহার। শুক্রবার (১ জুন) বাংলাদেশ সময় বিকাল তিনটার দিকে নাজমুন নাহার ভ্রমণের শততম দেশ জিম্বাবুয়েতে পা রেখে এ রেকর্ড গড়েন। এজন্য জিম্বাবুয়ে গভর্নরের কাছ থেকে পেয়েছেন ‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ বা ‘পতাকাকন্যা’ উপাধি।
নাজমুন নাহার শততম দেশ ভ্রমনের পর তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের পতাকা হাতে আজ পূর্ণ হলো আমার শততম দেশ ভ্রমণের ইতিহাস! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের সকল মানুষকে শুভেচ্ছা জানান জাম্বিয়ান সরকারের স্থানীয় গভর্নর হ্যারিয়েট কায়িনা! বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে গত সতেরো বছর ভ্রমণের ইতিহাসের আজকের মাইলফলক হিসেবে আমাকে ‘Flag Girl` উপাধি দেন জাম্বিয়ান সরকারের গভর্নর!’
নাজমুন নাহার জানান, বাংলাদেশের পতাকা উড়লো একশতম দেশ জিম্বাবুয়েতে। পৃথিবীর বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের উপর যে ব্রিজটি রয়েছে তা আমার শততম দেশের সাক্ষী হয়ে রইলো। পূর্ণ হলো আমার যাত্রার শততম ইতিহাস।
এর আগে জিম্বাবুয়েতে পৌঁছার আগে আরেক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, হ্যালো বাংলাদেশ, আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই বাংলাদেশের পতাকা হাতে আমি পা রাখবো একশতম দেশ জিম্বাবুয়েতে! আলহামদুলিল্লাহ! বাংলাদেশের পতাকা সর্বোচ্চ রেকর্ড প্রাপ্ত দেশে! সবাই থেকো আমাদের এই লাল সবুজ পতাকাতলে! আমি হৃদয়ে ষোলো কোটি মানুষকে নিয়ে পায়ে হেঁটে যাত্রা করবো জাম্বিয়ার বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত থেকে জিম্বাবুয়েতে!
আজকের এই মুহূর্ত শুধু আমার নয়, এই গৌরবময় মুহূর্তের অংশীদার বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ! এই মুহূর্তে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বাংলাদেশের স্বাধীন পতাকা পাওয়ার জন্য যারা যুদ্ধ করেছেন, প্রাণ হারিয়েছেন!- বলেন নাজমুন নাহার।
২০১৬ থেকে ২০১৭। দুই বছরে নাজমুন ঘুরেছেন ৩৫টি দেশ। ২০০০ সাল থেকে ২০১৮ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত তার ভ্রমণের ডায়েরিতে যুক্ত ছিলো ৯৩টি দেশের নাম। বর্তমানে মে মাসে আফ্রিকার যে সাতটি দেশ ভ্রমণে পূর্ণ হলো শততম দেশ।
নাজমুন নাহার সোহাগীর বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার হামছাদী ইউনিয়নে। ১৯৭৯ সালের ১২ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুরের হামছাদী ইউনিয়নের গঙ্গাপুর গ্রামে সোহাগীর জন্ম। ব্যবসায়ী বাবা মোহাম্মদ আমিন ২০১০ সালে মারা যান। পাঁচ বোন, তিন ভাইয়ের মধ্য নাজমুন সবার ছোট।
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন তিনি। এরপর সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে হিউম্যান রাইটস এন্ড এশিয়া বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রীলাভ করেন। ২০০৬ সালে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য সুইডেনে পাড়ি জমান। সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এশিয়ান স্টাডিজ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
একুশে/ওএফএইচ/এটি