চট্টগ্রাম : এবার বদলি আদেশ প্রত্যাহার করতে পারেননি। যেতেই হলো লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব আলমকে। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে অধীনস্থদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে লোহাগাড়া ছাড়লেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত ইউএনও মাহবুব আলম।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্র একুশে পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত ৯ মে লোহাগাড়ার ইউএনও মাহবুব আলমের দ্বিতীয় দফা বদলির আদেশ হয়। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা স্বাক্ষরিত সেই আদেশে লোহাগাড়ার ইউএনও মাহবুব আলমকে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইউএনও এবং কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের ইউএনও আবু আসলামকে লোহাগাড়ার ইউএনও হিসেবে যোগ দিতে বলা হয়।
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্র জানায়, স্বপদে বহাল থাকতে এই আদেশ প্রত্যাহারে নানা চেষ্টা-তদবির করে ব্যর্থ হন মাহবুব আলম। ফলে এবার তিনি লোহাগাড়া ছাড়তে বাধ্য হন।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল প্রথমবারের মতো লোহাগাড়ার ইউএনও মাহবুব আলমের বদলির আদেশ হয়। ১৯ এপ্রিলের মধ্যে তাকে লোহাগাড়া ছেড়ে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয় সেই আদেশে। কিন্তু তার আগেই স্বপদে বহাল থাকার নতুন আদেশ নিয়ে আসেন মাহবুব আলম।
সরকারদলীয় স্থানীয় এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন নদভীর অনুসারী একটি অংশ দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর প্যানেল আইনজীবী, সহিংসতা মামলার আসামী উপজেলা চেয়ারম্যানকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়াসহ জামায়াত-তোষণ, ইউএনও’র স্ত্রী সাবরিনা ইসলামের বাঁশেরকেল্লায় আসক্তি, ভিক্ষুক ফান্ডের নামে চাঁদাবাজি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে তার অপসারণ দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছিলো।
তারই প্রেক্ষিতে গত ১৩ এপ্রিল ইউএনও মাহবুব আলমের বদলির আদেশ হয়। কিন্তু সেই আদেশ প্রত্যাহার হয়ে স্বপদে বহাল থাকার নতুন আদেশ হওয়ায় আন্দোলনকারীরা নতুন করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা উপজেলা সদরে মানববন্ধনসহ লাগাতর কর্মসূচি পালন করে ইউএনওকে প্রত্যাহারে সাতদিনের আল্টিমেটাম দেন। কিন্তু এই আল্টিমেটাম থোরাই কেয়ার করেন ইউএনও।
তিনি আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত লোহাগাড়ায় থাকার ঘোষণা দিয়ে এমপি ও তার লোকজনদের সঙ্গে আরও বেশি বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। ইউএনও স্থানীয় এমপিকে বাদ দিয়ে উপজেলার মাসিক সমন্বয়সভা, আইনশৃঙ্খলার মিটিং করেন জামায়াতের উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদের নিয়ে।
এসবের প্রেক্ষিতে গত ৯ মে ইউএনও মাহবুব আলমকে দ্বিতীয়বার বদলির আদেশ হয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তর থেকে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শঙ্কর রঞ্জন সাহা (সার্বিক) সোমবার বিকেলে একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘লোহাগাড়ার ইউএনও আজ দুপুরে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে কর্মস্থল ছেড়েছে। এ মুহূর্তে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে তার বিদায় অনুষ্ঠান হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসক আমাকে জানিয়েছে। বুধবারের মধ্যে তাকে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে।’
# লোহাগাড়া ইউএনও’র ‘জামায়াত-প্রীতি’, স্ত্রী আসক্ত ‘বাঁঁশেরকেল্লায়’!
# ইউএনও’র দাপট : সরকারদলীয় এমপি বাদ, জামায়াত চেয়ারম্যানকে নিয়ে মাসিকসভা
# ইউএনওকে প্রত্যাহারের দাবিতে লোহাগাড়ায় সড়ক অবরোধ
একুশে/এটি