ঢাকা: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের টাকা খরচ করেছেন, বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। বলেছেন, তারেক কি মামুনের বোনজামাই যে উনি (তারেক) মানুষের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন? বাংলাদেশের মানুষ কি বোকা? একজনের কার্ড দিয়ে টাকা খরচ করছে আবার বলছে তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার সুযোগ নেই।’
সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর একটি কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বর্ধিত সভায় তিনি কথা বলেন।
হানিফ বলেন, ‘বিএনপির আইনজীবীরা বলেছেন, তারেক রহমান তো টাকা পাঠাননি। টাকা পাঠিয়েছেন মামুন। আর মামুনের সঙ্গে তারেক রহমানের কোনো সম্পর্ক নেই। সিঙ্গাপুরে একটি ক্রেডিট কার্ড থেকে তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে হানিফ বলেন, ‘তারেক রহমানের যে রায় হয়েছে আপনারা আইনি লড়াই করে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করুন। এই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা তত্ত্বাধায়ক সরকারের আমলে হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের যে বিচারক রায় দিয়েছিলেন তিনি আরেক অপরাধী। অপরাধী বলেই স্বপরিবারে বিদেশে পালিয়ে চলে গেছেন। অর্থের বিনিময়ে তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছিলেন।’
‘এই সরকার দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, ‘ধ্বংস বাংলাদেশ হচ্ছে না। আপনার জঙ্গিবাজ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার দুর্নীতিবাজ পুত্রের কারণে আপনার দল ধ্বংস হচ্ছে। আপনার ভেবেছেন সন্ত্রাসী করে সরকারের পতন ঘটবে। ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ নেই। শেখ হাসিনা পাশে বাংলাদেশের মানুষ আছে। যতদিন শেখ হাসিনার পাশে বাংলাদেশের মানুষ থাকবে তত দিন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকবে।’
বাংলাদেশে সন্ত্রাস-নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠন জড়িত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর পেছনে মূলত দুটি রাজনৈতিক দল জড়িত। একটি হচ্ছে বিএনপি আরেকটি জামায়াত। প্রত্যেকটি ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, যারা ধরা পড়েছে, যারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে তারা বিএনপি-জামায়াত। এটার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত সবগুলো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জামায়াত এবং বিএনপির সন্ত্রাসীরা জড়িত।’
হানিফ বলেন, ‘তারেক রহমান লন্ডনে বসে ইহুদি-নাসারার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। মেন্দি এন সাফাদি পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের খবর স্বীকার করেছেন। এই খবর প্রকাশ হওয়ার পরই দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গুপ্তহত্যা ভিন্নমাত্রা পেয়েছে।’
লন্ডনের হাউস অব লর্ডস-এ যোগ দিতে যাওয়া বিএনপি প্রতিনিধি দলের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের এক নেতা সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। জামায়াতের নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তার পরিচয় উদঘাটন হওয়ার পর এক পর্যায়ে তাকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়। বিএনপি-জামায়াত থেকে আলাদা হবে না। তারা আইএসআই দ্বারা তৈরি, আইএসআই দ্বারা পরিচালিত। বিএনপি-জামায়াত একই মায়ের পেটের সন্তান, এটা প্রমাণিত।’
তিনি বলেন, ‘ধর্মের দোহাই দিয়ে হোলি আর্টিজান হোটেলে হামলা করা হলো। এই হত্যাকাণ্ড আমাদের দেশের জন্য বড় আঘাত এসেছে। এর পেছনে কারা জড়িত, মদদদাতা সেটাও বেরিয়ে এসেছে। খুব দ্রুতই তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে আমরা সক্ষম হবো। প্রধানমন্ত্রী যখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন সন্ত্রাসের রানী, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা বেগম খালেদা জিয়া এই সুযোগটা নেয়ার চেষ্টা করছে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক প্রমুখ।