‘হাজী ইকবাল কি এতই ক্ষমতাধর?’

চট্টগ্রাম : যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন হত্যামামলার আসামি হাজী ইকবালসহ অন্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশ আর কত সময় নেবে- এমন প্রশ্ন রেখেছেন নিহত মহিউদ্দিনের স্বজনেরা। তাদের প্রশ্ন-হাজী ইকবাল কি এতই ক্ষমতাধর?

এক মাস ১৯ দিনেও যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিনের খুনীরা গ্রেফতার না হওয়ায় উল্টো মামলা তুলে নেয়া এবং সাক্ষীদের সাক্ষ দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য হত্যাকারিরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে অভিযোগ করে মহিউদ্দিনের স্বজনেরা জানান, এলাকাবাসীসহ সকল ছাত্র-যুবকের একটিই প্রশ্ন-বিচারের বাণী কি নীরবে নিভৃতে কাঁদবে? এসময় প্রশাসনের শৈথিল্যের সুযোগে মহিউদ্দিন হত্যার আসামিরা তাদের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করছে বলেও অভিযোগ করা হয় নিহত মহিউদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে।

রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন নিহত যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিনের ছোট বোন হীরা আকতার। এসময় মহিউদ্দিনের মা নূর সেহের বেগম, বড়ভাই আবু ইউসুফ, তার স্ত্রী সানজিদা আক্তার, শিশুসন্তান আদহাম, বোন রূপা আকতার, চাচা মো. আলী মইনু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদও এসময় উপস্থিত থেকে মহিউদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন মহিউদ্দিনের মা নূর সেহের বেগম।

‘মহিউদ্দিনের তিন বছরের একমাত্র শিশুপুত্র আদহাম নাওয়া-খাওয়া ভুলে আজও বাবার প্রতীক্ষায় দিন গুণছে। প্রতিনিয়ত বাবাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। বাবার ছবি ও পোস্টার নিয়ে বিচারের প্রার্থনা করছে।’

শিশু আদহামকে কোলে নিয়ে স্বজনেরা এই কথাগুলো যখন বলছিলেন তখন সংবাদ সম্মেলনকক্ষে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে ‘মা’ সম্বোধন করে খুনী ইকবালসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

প্রসঙ্গত, পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ২৬ মার্চ হালিশহর মেহের আফজাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে তার কক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবাল, তার ভাই মুরাদ, ভাতিজা বিপ্লবসহ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে যুবলীগ নেতা মো. মহিউদ্দিনকে।

এর আগে একই স্কুলে ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ নিহত মহিউদ্দিনের চাচা মো. আলী মঈনুকে তার শিশুপুত্রের সামনে হাজী ইকবালের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে মারাত্মক জখম করে। এ মামলার অন্যতম সাক্ষী ‌ছিলেন নিহত মহিউদ্দিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাজী ইকবালের লোকজন মহিউদ্দিনের ওপর হামলা করে এবং তার গাড়ি ভাঙচুর করে। সেসময় এ ঘটনায় হাজী ইকবালসহ অন্যদের বিরুদ্ধে একটি মামলা ও জিডি করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

একুশে/এটি