আবু_আজাদ : গতকালের বৃষ্টির পর মালামাল ওঠানোর কাজে স্থবিরতা নেমেছে আনু মাঝির ঘাটে। জয়নালের চোখেমুখে একরাশ হতাশার ছাপ। গত মাসেও তেমন কাজ পাননি, আজ মাসের শুরুতেও কাজ নেই।
মে দিবসের সকালে চট্টগ্রাম নগরের আনু মাঝিরঘাট এলাকায় গিয়ে এ চিত্র দেখা গেল।
কুষ্টিয়ার জয়নাল একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ শবে বরাত। অথচ এখনও কাজ পাইনি। আমার মাঝি আসেন নাই। অন্যের সঙ্গে ‘কামলা’ দেয়ার চেষ্টায় আছি। বিকেলের আগে ছেলেমেয়ে গুলোর জন্য অন্তত একটা মুরগি আর কিছু চাল নিয়ে বাসায় যেতে হবে।’
ছেলে-মেয়ে পরিবারের কথা মনে থাকলেও জয়নালের মনে নেই বিশ্ব নিপীড়িত শ্রমিকদের স্মরণে ‘মে দিবসে’র কথা। জানতে চাইতেই ক্ষোভ ওঠে জয়নালের কণ্ঠে।
বলেন, ‘কাজ না করলে, মুখের কথায় পেট ভরে না। গত মাসেও কাজ ছিল না তেমন। আজও একই অবস্থা। যারা বড় বড় কথা বলেন, তারা আমার বাড়ি বয়ে খাবার দিয়ে আসেন না। তারা শুধু বক্তৃতা দিয়েই খালাশ। ঘাম-রক্তের বিনিময়েই এখানে মজুরি মেলে, জীবিকা চলে, চলে সংসার।’
শেষ দিকে একটু মেজাজ ঠান্ডা করে জানান, মে দিবসের ইতিহাস পুরোপুরি জানা নেই জয়নালের। তবে দাবি আদায়ের জন্য সংগ্রামের কথা জানেন তিনি।
জয়নালের কথায়, ‘আজ সবাই বলেন কাজ করা ভালো না। কাজ না করলে আমার ছেলেগুলোরে কে খাওয়াবে। ওই কথা কেউ বলেন না।’
এর আধ ঘণ্টার মধ্যেই ডাক পড়ে জয়নালের, অন্যের সঙ্গে ‘বদলা’ যাবেন তিনি। ট্রলার থেকে মালামাল নামাতে হবে। এবার হাসি ফোটে জয়নালের চোখে-মুখে।
একটু অপরাধীর চোখে তাকিয়ে বলেন, ‘কিছু মনে করবেন না। কাজ না থাকলে মাথা ঠিক থাকে না।’
একুশে/এএ