শাহ আমানত সেতুর পাটাতনে গর্ত!

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতুর (তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু) এক পাশের পাটাতন ভেঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে বড় আকারের গর্ত। এতে যে কোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন সাধারণ মানুষ। দেশের বৃহৎ স্থাপনার এমন বেহাল দশা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওজন পরিমাপক যন্তের অভাবে প্রতিনিয়ত সেতুর উপর দিয়ে অতিরিক্ত মালবোঝাই গাড়ি চলাচল করছে। এতে সেতুটিকে ক্রমেই ঝুঁকিপুর্ন হয়ে উঠছে। এর আগেও শাহ আমানত সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে কথা উঠলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা কখনোই নেয়া হয়নি।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুল ইসলাম একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘সেতুসহ যেকোনো স্থাপত্যশৈলীর ওজন বা চাপ সহনশীলতার একটি ব্যাপার থাকে। এটি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে দেশের অন্যতম মেঘনা সেতুতে। এ সেতুতে ৩০ টনের বেশি মালবোঝাই গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ, যা ওজন পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ওজন পরিমাপক যন্ত্র না থাকায় শাহ আমানত সেতুর রক্ষণব্যবস্থা সম্পূর্ণ অরক্ষিত।’

দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৭টি উপজেলা, পার্বত্য জেলা বান্দরবান, পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও টেকনাফে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে এ সেতু দিয়ে। ওই সব এলাকার অর্থনীতিও অনেকটা এ সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত। কোনো কারণে এ সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওই সব এলাকা যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। পুরো দেশের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার না হওয়ায় ইতোমধ্যে সেতুর বেশ কিছু মূল্যবান যন্ত্র খোয়া গেছে। ওজন পরিমাপক যন্ত্র না থাকায় অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে পার হচ্ছে যানবাহন।

বাংলাদেশ ও কুয়েত সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্য, ৪০ দশমিক ২৪ মিটার প্রস্থের কংক্রিটের এ সেতুটি নির্মাণ করে চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন। ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু উদ্বোধনের আট বছর পরও সেখানে এক্সেল লোড কন্ট্রোল বা ওজন পরিমাপক যন্ত্র স্থাপন করা হয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত মাত্রাতিরিক্ত পণ্য নিয়ে এ সেতু পার হচ্ছে অনেক যানবাহন।

একুশে/এএ