ঢাকা: জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের আস্থায় নিতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত কলেজ অধ্যক্ষদের নিয়ে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শান্তির সমাবেশে’ মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন আর রশিদ। এতে দেশের বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা অংশ নেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পেছনে আপনারা সময় দেবেন, তাদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। তাদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসে কি না, খেয়াল রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষের বাইরে সভা করে হোক বা অন্যভাবে হোক তাদের জঙ্গিবাদের ভয়াবহ কুফল সম্পর্কে বোঝাতে হবে। শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা একটা নতুন পরিস্থিতি দেখছি। আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা আজ যে সমস্যায় আছি, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। এ থেকে উত্তরণের জন্য সারাদেশের সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা শিক্ষা পরিবার যারা আছি, তারা এ পরিস্থিতিতে বসে থাকতে পারি না। বসে থাকলে চলবে না। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কেউ বিপথগামী করতে গেলে, তারা যেন শিক্ষককে এসে জানায়। কেউ কেউ তাদের অন্যপথে নেয়ার চেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকদের মিশতে হবে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কিছু উদাহরণ দিয়ে বুঝাতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের এক তৃতীয়াংশ মানুষ শিক্ষা পরিবারের সঙ্গে জড়িত। কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ লাখ। তারা যদি বিপথগামী হয় তাহলে আমাদের আশা ভরসা শেষ হয়ে যাবে। আপনারা শিক্ষকরাও কষ্ট পাবেন। তাই যার যার কর্মক্ষেত্রে গিয়ে এ ব্যাপারে কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জঙ্গি কার্যক্রমে যারা যুক্ত হচ্ছে তারা তরুণ প্রজন্মের। আমাদের কিছু নামিদামি প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের তৎপরতা চলছে। তারা মেধাবী উচ্চবিত্ত পরিবারের। তাদের কোনো কিছুর অভাব নেই। তাদের এই ধরনের কাজে উদ্বুদ্ধ করে কাজে লাগানো হচ্ছে। আবার কোনো কোনো শিক্ষককেও কাজে লাগানো হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে দক্ষ ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিতে পারে, সেভাবে তাদেরকে গড়ে তুলতে হবে। বিশ্বমানের জ্ঞান-প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, নিষ্ঠা, মানবিকতার শিক্ষা দিতে হবে। পরিপূর্ণ দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’
গুলশান ও শোলাকিয়া হামলায় পুলিশ জীবন দিয়ে বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে আমাদের রক্ষা করেছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘গুলশানে হামলাকারীরা ইসলামের অনুসারী হতে পারে না, ইসলামের সঙ্গে এদের কাজের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘গুলশানে তারা তারাবির নামাজের সময় হামলা করেছে। তারা যদি ইসলামের রীতিনীতি মানত, তাহলে তারা ওই সময় নামাজে যেত, মানুষ হত্যা করতে নয়।’
